বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায়ের ওপর দেশের ভবিষ্যত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্ভর করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া-বিএনপিকে বাইরে রেখে, জেলে রেখে এই দেশের জনগণ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। খালেদা জিয়াকে ছাড়া, বিএনপিকে ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না এবং হতে দেয়া হবে না।’
খালেদা জিয়াকে মামলায় অন্যায়ভাবে কোন রায় চাপিয়ে দেয়া হলে সেটি ‘জনগণের সেন্টিমেন্টের ওপর রায় দেয়া হবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ওই রায় তারা মানবে না।’
মোশাররফ বলেন, ‘অন্যায্য রায় হলে সেটি দেশের জনগণের বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে সমর্থন, সেই সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে। বেগম জিয়া যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে, সেই গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হবে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে রায় দেয়া হলে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে।’
এক-এগারোর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তা থেকে শিক্ষা নিতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে স্মরণ করে দিতে চাই, যারা মাইনাস টু চিন্তা করেছিল তারা কিন্তু এখনো আছে। তারা ওৎ পেতে বসে আছে। আপনাকে দিয়ে মাইনাস ওয়ান (খালেদা জিয়া) করে পরবর্তীতে তারা আপনাকেও (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মাইনাস করবে। এভাবে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চায় তারা।’
বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে খালেদা জিয়াকে মাইনাস করা যাবে না জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘স্মরণ করে দিতে চাই এক-এগারোর জরুরি আইনে মাইনাস টু করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র ঘোষণা করে পদক্ষেপ নিয়েছিল। জনগণ এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের দৃঢ়তার জন্য মাইনাস টু করা সম্ভব হয়নি। যারা মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছিল তারা সুকৌশলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে মাইনাস ওয়ান করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।’
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই আইনে যে সংশোধন আনা হয়েছে তা ৫৭ ধারা থেকেও আরেও ভয়ঙ্কর। অনুসন্ধানী কিছু প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরকে কিছু কাজ গোপনে করতে হয়। এখন তা করা যাবে না।’
‘আমরা মনে করি যেহেতু সরকার অলিখিত বাকশালের পথে হাটছে, মুক্তমনের ব্যক্তিদের, মতপ্রকাশের শক্তিকে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রেজাবুদৌল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ন কবির বেপারীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা।