bnp_jamat

রংপুর সিটি নির্বাচন>> জামায়াতকে পাচ্ছে না বিএনপি

রংপুর থেকে নির্বাচনী হাওয়ায় ভাসছে রংপুর নগরী। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ভোটের হিসাব-নিকাশ ততই কঠিন হয়ে পড়ছে। ২১ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হতে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতীক নিয়ে মাঠে লড়ছেন। তবে মাঠের প্রচারণায় ৩-৪ জনের নাম শোনা গেলেও অন্যদের প্রচারণা তেমন চোখে পড়ছে না। নির্বাচনে মেয়র পদে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি আলাদা প্রার্থী দিলেও জামায়াতে ইসলামী কোনো প্রার্থী দেয়নি।

এ জন্য জামায়াতের ভোট পেতে আগ্রহী মেয়র প্রার্থীরা। যদিও আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি প্রকাশ্যে বলছে, জামায়াতের ভোটের প্রয়োজন নেই। তবে তলে তলে জামায়াতের ভোট আদায়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের প্রধান শরিক জামায়াত হলেও এখন পর্যন্ত দলটির নেতা-কর্মীদের পাশে পাচ্ছে না বিএনপি। দলটির মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায়ও জামায়াতের কোনো নেতার দেখা মিলছে না।

এ জন্য অনেকটা বেকায়দায় রয়েছেন বিএনপির প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা। তবে জামায়াতের ভোট ধানের শীষের বাক্সে ভরতে উঠেপড়ে লেগেছে বিএনপি। বিএনপির মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিজু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমরা আমাদের শরিক জামায়াতকে পাশে পাইনি।

তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকও হয়নি। তবে শিগগিরই বৈঠক হবে। আসলে মহানগর জামায়াতের অসংখ্য নেতা-কর্মীর নামে একাধিক মামলা থাকায় তারা প্রকাশ্যে আসতে সাহস পাচ্ছেন না। ’ এদিকে গতকাল নগরীর ১৩, ১৪, ১৫, ২৪, ২৬ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ফুরফুরে মেজাজে প্রচারণার মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু ও জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

পিছিয়ে নেই একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করছি।

সর্বত্র নৌকার জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকার পক্ষে নেমে পড়েছে। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তফা বলেন, লাঙ্গলের পক্ষে ভোট-বিপ্লব হবে। বিএনপির প্রার্থী বাবলা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষেরই জয় হবে। এদিকে রংপুর নগরী এখন ভোট উত্সবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। নগরীর সর্বত্রই এখন নির্বাচনী আলোচনা।

চা স্টল থেকে শুরু করে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, পাড়া-মহল্লায় শুধুই নির্বাচনী আলোচনা। নগরীর জিলা স্কুলের পাশের চা দোকানি মোতলেব মিয়া বলেন, ‘নির্বাচন তো আইলো, হক্কলের মুহে অহন খালি ভোটের কতা হুনি। ’ জাহাজ কোম্পানির মোড়ের চা দোকানি মহররম আলী বলেন, ‘সারা দিন লোকজন আইসে চা খায়, কেউ কয়, নৌকা জিতপে, ফির কেউ কয় নাঙ্গল জিতপে। ’

নির্বাচন ঘিরে কর্মসংস্থান : সিটি নির্বাচন ঘিরে এক ধরনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। পুরুষ, নারী ও যুবকরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রার্থীদের লিফলেট ও ভোটার স্লিপ বিতরণ করে আয়ের মুখ দেখছেন। কেউ আবার মাইকিং করে এবং পোস্টার লাগানোর কাজ করেও আয় করছেন।

একেকজন কর্মী দৈনিক ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা হাজিরায় এসব কাজ করছেন বলে একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ধুমখাটিয়া এলাকার গৃহবধূ রাশেদা আক্তার বলেন, তিনি একজন কাউন্সিলরের পক্ষে লিফলেট ও ভোটার স্লিপ বাড়ি বাড়ি বিতরণ করে দৈনিক ৩০০ টাকা পাচ্ছেন।

৩০ নম্বর ওয়ার্ডের শনিবাড়ি এলাকার পুরুষ কর্মী আবদুল গফুর বলেন, ‘দিনের এক বেলা এক মেয়র প্রার্থীর আর দুপুরের পর থাকি সন্ধ্যা পর্যন্ত এক কাউন্সিলরের পক্ষে লিফলেট ও ভোটার স্লিপ বিতরণ করি দৈনিক ৫০০ টাকা আয় করতুচি। সংসারও ভালো চলতোচে’। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন বলেন, দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করে ৫০০ টাকা পাচ্ছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin