যেভাবে সরকারকে হঠাতে চায় বিএনপি-জামায়াত

আন্দোলন নয়, গণঅভ্যুত্থান নয়, বরং পরিকল্পিত কিছু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই সরকারকে হঠাতে চায় বিএনপি জামাত জোট। বিএনপি এবং জামায়াতের উগ্রপন্থী একটি অংশ এরকম একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। যে পরিকল্পনার মূল নকশা তৈরি করা হয়েছে লন্ডনে।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সরকার হঠানোর জন্য আন্দোলন নয় বরং অন্য কৌশল গ্রহণ করেছে। আর এই কৌশলের মাধ্যমে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি এবং জামায়াতের একটি অংশ। যাতে সরকার সরে যেতে বাধ্য হয়। এই  নীলনকশার পাঁচটি দিক রয়েছে:-

১। গুজব এবং অপপ্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি : ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব-সন্ত্রাস এবং অপপ্রচার শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী সম্পর্কে নানা রকম মনকাড়া, উস্কানিমূলক কথাবার্তা প্রচার করা হচ্ছে।

একইসাথে সরকারের বিরুদ্ধে অনেক অসত্য মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সর্বত্র। এসবের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্ত তৈরি হচ্ছে। আর সরকারের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। এটি এই অপপ্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছে বিএনপি ।

২।  প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা: ইতিমধ্যে প্রশাসনে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে । প্রশাসন ক্যাডারের সাথে অন্য ক্যাডারের যে বিরোধ, সে বিরোধ নতুন করে চাঙ্গা করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ও প্রকৃচি গঠন করা হয়েছিল এবং সে সময়ে প্রকৃচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

এখন আবার নতুন করে প্রকৃচি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশাসনে পদোন্নতি সহ নানা রকম বিষয় নিয়ে এক ধরনের অসন্তোষ এবং বিভক্তি দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা সক্রিয় হয়েছেন। এসবই করা হচ্ছে সরকারকে কোণঠাসা করার জন্য এবং বেকায়দায় ফেলার জন্য। 

৩। বাজারে অস্থিরতা: পরিকল্পিতভাবে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সে চেষ্টায় সফল না হওয়ার পর আলুর বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেটি যখন সফল হয়নি এখন অন্যান্য পণ্যের দিকে মনোযোগ দিয়েছে এই সিন্ডিকেট। বিএনপি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত এই সিন্ডিকেট যেকোনোভাবে বাজারে অস্থিরতা তৈরীর চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।

৪। ধর্মীয় উস্কানি সৃষ্টি: ইতিমধ্যে ধর্মীয় উস্কানি সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে। ধর্মীয় উস্কানি কাজে লাগিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কে খেপিয়ে তোলার যে প্রয়াস, সে প্রয়াসের অংশ হিসেবে একটি বড় অংশকে দখলে নিয়েছে জামাত-বিএনপি।

সেই সাথে ফ্রান্স সহ বিভিন্ন ইস্যুতে এক ধরনের উন্মাদনা সৃষ্টির নীলনকশা রয়েছে বিএনপি জামাতের একটি অংশের কাছে। এছাড়াও সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে বলে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে আন্তর্জাতিক মন্ডলে সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করছে।

৫। পরিকল্পিত নাশকতা:  গত বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) একযোগে ঢাকা শহরের ৬ টি স্থানে ১১ টি বাসে আগুন লাগানো হয়। এটি একটি টেস্ট কেস, এরকম নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নাশকতা সৃষ্টি করে জনমনে আতঙ্ক এবং সরকারকে অস্থির করে তোলা।

বিশেষ করে বড় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নাশকতা সৃষ্টি করে বড় ধরনের আতঙ্কের সংস্কৃতি তৈরি করার চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত জোট । তারা মনে করছে যে, এভাবে সরকারকে বিপদে ফেলা যাবে এবং এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে যার ফলে সরকার সরে যেতে বাধ্য হবে। সরকার জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছেন এবং সরকারের ওপর জনগনের একটা আস্থা সেই আস্থাও নষ্ট হয়ে যাবে।

তবে বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র করে এখন ক্ষমতায় যাওয়া যায় কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। তারা বলছেন যে, সেই দিন এখন আর নেই, ষড়যন্ত্র বিএনপি আগেও করেছে এখনো করছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত করার বাস্তব অবস্থা এখন আর নেই।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin