যেখানেই থাকি আপনাদের সঙ্গেই আছি : খালেদা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমি যেখানেই থাকি না কেন আপনাদের সঙ্গেই আছি। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কেউ কিছু করতে পারবে না। অতীতেও পারেনি ভবিষ্যতেও পারবে না। ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। সময় এসছে, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদেরকে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে নির্বাহী কমিটির সভার প্রথম সেশনে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি এসব কথা কলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা মনে করছেন আমি খবর রাখি না। আমি সবার খবর রেখেছি। যারা বেঈমানি করেননি তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। যারা বেঈমানি করবে, এক পা এদিকে আরেক পা অন্যদিকে রাখেন তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে না।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তখন যারা সঙ্গে ছিলেন যাদের ত্যাগ ছিল তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার চলবে না মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ইভিএম চলবে না। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। কারণ বর্তমান ক্ষমতাশীন সংসদ বৈধ নয়।

খালেদা জিয়া বলেন, আজ জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। যার প্রমাণ বিএনপির এই জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ডিসেম্বরে যদি নির্বাচন হয় তাহলে এত আগেই কেন নির্বাচনী ক্যাম্পেইন? এর মানে হচ্ছে- নৌকা এত ডোবা ডুবেছে যে এখন থেকেই নির্বাচনী ক্যাম্পেইন শুরু করে ডুবন্ত নৌকাকে টেনে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে অস্ত্রের মুখে গুম-খুন নির্যাতন চালিয়ে আওয়ামী লীগ দেশকে ভয়ভীতির রাজ্যে পরিণত করেছে। এখন দেশ ও নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ কিভাবে নির্বাচনে একা পার হবেন। নৌকা নিয়ে তারা খুব চিন্তিত।

jagonews24

প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে : খালেদা

সরকার প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। যারা নিজেদের গণতান্ত্রিক বলছেন, তারা অস্ত্রের মুখে জোর করে মিথ্যা তথ্য দিতে বাধ্য করছে। এদের মধ্যে আর মঈন- ফখরুদ্দিনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর রোডের হোটেল লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত দলের নির্বাহী কমিটির সভায় উদ্বোধনী ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, দেশের ক্রান্তিকাল চলছে। আমরা এখানে সভা করতে চাইনি। কিন্তু কেন সভা করতে দেয়া হলো না। বিএনপি সবচেয়ে বড়দল। তারপরও বলবেন দেশে গণতন্ত্র আছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল আইনের নামে নতুন কালাকানুন করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা সত্য কথা বলে। সেইকথাগুলো যখন মানুষ শুনে তখন জনগণের অধিকার হরণ করতে নতুন আইন করা হচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, তারা বলছে নির্বাচন হবে ডিসেম্বরে। প্রচার করে বেড়াচ্ছে। নৌকা এমন ডোবা ডুবছে যে তোলার জন্য এত আগে ভোট চাইতে হচ্ছে, হাত তুলে ওয়াদা করাতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আবার আগের মতো গুম-খুন, নির্যাতন চালিয়ে দেশে ভীতিকর পরিস্থিতির তৈরা করা হচ্ছে। বাড়িবাড়ি গিয়ে ধরে নেয়া হচ্ছে নেতাকর্মীদের। তারা জানে বিএনপির সম্পর্ক জনগণের সঙ্গে। তাই মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে পারলে সুবিধা।

খালেদা জিয়া বলেন, সর্বোচ্চ আদালত বলছে নিম্ন আদালত সরকারের কব্জায়। পত্রিকায় যা দেখছি তাতে বোঝা যাচ্ছে সঠিক রায় দেয়ার সুযোগ নেই। সঠিক রায় দিলে কী পরিণতি হয় তা তো দেখেছেন। তারেক রহমানের রায় দেয়ার পর বিচারককে দেশ ছাড়তে হয়েছে। অপরাধ নেই। সেখানে কিসের বিচার হবে। কিন্তু তারা জোর করে বিচার করতে চায়।

বিএনপি নেত্রী বলেন, সংসদ বহল রেখে নির্বাচন করতে চায়। এটা কোনো দেশে নেই। নিজস্ব দলীয় লোকদের প্রশাসনে বসানো হচ্ছে। তারা মনে করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে সহযোগিতা করবে। কিন্তু তারা যদি একটু নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করার তাহলে কারো কোনো কথা শুনবে না। কারণ তারা এদেশের নাগরিক। প্রশাসনকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান থেকে উঠিয়ে দেয়া হলো। কিন্তু এটা তো আমাদের দাবি ছিল না। আওয়ামী লীগ ও জামাতের দাবি ছিল। তারা ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। চট্টগ্রাম বন্দর অচল করে দিয়েছিল।

পুলিশও চায় নিরপেক্ষ গণতন্ত্র থাকুক। কিন্তু তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া। নির্দেশ পালন না করলে পরিণতি ভালো হবে না।
বিএনপির সঙ্গে জনগণ, পুলিশ, সশ্বস্ত্র বাহিনী আছে। যারা বাইরে আছে তারাও আমাদের সঙ্গে আছে। তাই বিএনপির কোনো ভয় নেই। ভয় আছে আওয়ামী লীগ।

দুর্নীতি মামলায় দুদকের আইনজীবীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকের পিপিকে মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সময়েও দেখেছি। এখনো আছে। তাকে দোষ দিব না। হয়তো তাকেও বাধ্য হয়ে এমনভাবে কথা বলতে বা স্বর উচ্চারণ করতে হয় যাতে যারা শোনার তারা যেন বুঝে নির্দেশ কোথা থেকে আসছে। সে কারণে হয়তো নিজে একটু জোরোসোরে কথা বলে নিজের পজিশন ঠিক রাখে।

তিনি বলেন, দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলছে। জনগণকে ন্যায্যমূল্যে কিছু দেয়ার কথা সরকার ভাবে না।

jagonews24

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin