tabit_salim

মেয়র প্রার্থীতা নিয়ে ২০ দলে বিদ্রোহ

বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার কথা ছিল আজ সোমবার রাতে। কিন্তু বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার সকালে নিশ্চিত করেছেন যে, সোমবার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হচ্ছে না। তিনি অবশ্য এর কোনো কারণ ব্যাখা করেননি। তবে তাবিথ আউয়ালের মনোনয়ন নিয়ে ২০ দলে বিদ্রোহ এবং চ্যালেঞ্জের মুখে বিএনপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা পিছিয়েছে বলে জানা গেছে।

বিএনপির প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে জামাত প্রার্থী সেলিম উদ্দিন ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে। গত রোবার রাতে ২০ দলের অন্যতম শরীক বিজেপির সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থও মেয়র নির্বাচনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কল্যাণ পার্টি, খেলাফতে মজলিশসহ ২০ দলের অন্তত ৪টি শরীক সংগঠন পার্থকে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করেছেন।

রাতেই এই খবর বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে পৌঁছে। তিনি দলের মহাসচিবকে জোটের শরীকদের নিয়ে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০ দলীয় জোটে বিদ্রোহ বিএনপিকে কোনঠাসা করে ফেলেছে।

প্রণব মুখার্জীর সাক্ষাৎ চান বেগম জিয়া

২০১৩র ৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রণব মুখার্জীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। এর মধ্যেই ৪ মার্চ সোনারগাও হোটেলে ভারতের রাষ্ট্রপতির সাথে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বৈঠকের সময় সূচি নির্ধারিত। কিন্তু ৩ মার্চ বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হলো, বেগম জিয়া প্রণব মুখার্জীর সাথে নির্ধারিত বৈঠকটি বাতিল করেছেন।

বিস্ময়ে সবাই হতবাক। প্রণব মুখার্জী কি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন জানা যায়নি। তবে, ভারত যে বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি তা খোলামেলা ভাবেই পরবর্তী বছরগুলোতে প্রকাশ করেছে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ভারতের সাথে বিএনপির সম্পর্ক অবনতির অনেকগুলো কারণের একটি প্রণবের সাথে বেগম জিয়ার বৈঠক বাতিল। ঐ ঘটনার জন্য এখনও বিএনপি নেতৃবৃন্দ অনুতাপ অনুশোচনায় ভোগে।

প্রায় পাঁচ বছর পর আবার এসেছেন প্রণব মুখার্জী। তবে এবার রাষ্ট্রপতি হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে। কিন্তু ভারতের রাজনীতিতে প্রণব মুখার্জীর ভূমিকা সব সময়ই ছিল এবং থাকবে।

বিশেষ করে বাংলাদেশ প্রশ্নে প্রণবের মতামত ভারতের রাজনীতিতে সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এটু বুঝতে পেরেই কি বেগম জিয়া প্রণব মুখার্জীর সাক্ষাৎ প্রার্থী। ভারতীয় দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে প্রণব মুখার্জীর সাথে বেগম জিয়ার একটি বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ করা হয়েছে। প্রণব মুখার্জীর সফরসূচি পূর্ব নির্ধারিত।

শুধু বুধবার সকালে তিনি প্রটোকলে বাইরে কিছু লোকজনের সাথে তার দেখা সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। বিএনপি চাইছে ঐ সময় বৈঠক করতে। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতির সাথে কথা না বলে সময় নির্ধারণ করা সম্ভব না। ২০১৩? স্মৃতিচারণ করে কি প্রণব মুখার্জী বেগম জিয়াকে সময় দেবেন?

‘তারেককে টাকা দিয়ে তাবিথ মনোনয়ন কিনেছে’

জামাত অভিযোগ করেছে যে, যোগ্যতা কিংবা জনপ্রিয়তার বিচারে নয় বরং তারেক জিয়াকে টাকা দিয়ে মনোনয়ন পেয়েছে তাবিথ আউয়াল। দলটি বিএনপিকে বলেছে, জামাত নীতিগত ভাবে মনোনয়ন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে, তাই তাবিথ আউয়ালকে ২০ দলের একক প্রার্থী হিসেবে তারা মেনে নেবে না। রোববার দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে জামাত নেতৃবৃন্দের বৈঠকে এই অভিযোগ করা হয়।

জামাতের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। আগামী ১৬ জানুয়ারি রাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে একক প্রার্থীতার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, জামাতকে ঢাকা উত্তর মেয়র পদে প্রার্থী না দেওয়ার জন্য রাজি করাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ দুপুরে গুলশানের একটি বাড়িতে জামাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে জামাত বলে, ২০ দল যদি এককভাবে প্রার্থী দিতে আন্তরিক হতো, তাহলে ২০ দলীয় জোটগতভাবে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেওয়া উচিত ছিল। সেটি হলো না কেন? জামাত বলে, বিএনপি জোটে বড় দল এজন্য তারা তাদের সিদ্ধান্তই জোটের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে। উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরকম কোনো চিন্তা থেকে তারা এটি করেননি।

তিনি বলেন, যেহেতু দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেহেতু জামাতের নিবন্ধণ নেই, তাই এই নির্বাচনে জামাতের প্রার্থী দেওয়া হবে অর্থহীন। উত্তরে জামাতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, জামাতের কর্মীরা মার্কা দেখে ভোট দেয় না, তারা ভোট দেয় প্রার্থী দেখে। আমাদের যে প্রার্থী যে প্রতীক নিয়েই দাঁড়াক, তাঁকে কর্মীরা ভোট দেবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জামাত স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করলে, সরকারই লাভবান হবে, জামাত বা বিএনপির কোনো লাভ হবে না। উত্তরে জামাত প্রতিনিধিরা বলেন, একক নির্বাচন করলে সবচেয়ে লাভবান হবে জামাত। আমাদের শক্তি কতটুকু তা সরকার এবং বিএনপি বুঝবে। এর ফলে সরকারও জামাতকে হিসেব করবে, বিএনপিও জামাতকে গুরুত্ব দেবে।

জামাত নেতারা বলেছেন, যদি জোটের বৈঠকে আলাপ-আলোচনা করে তাবিথকে প্রার্থী করা হতো, তাহলে আমরা মেনে নিতাম। কিন্তু আমরা জানি, লন্ডন থেকে তাবিথকে প্রার্থী করা হয়েছে, জোট তো দূরের কথা বিএনপিতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এরকম চাপিয়ে দেওয়া প্রার্থীর ব্যাপারেই জামাতের আপত্তি।

মির্জা ফখরুল আশ্বাস দেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়ের আগেই জোটের ‘বৈঠকে’ প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা হবে। এতে জামাত রাজি হয়। তবে জামাত জানিয়েছে, তাদের প্রার্থী সেলিম মনোনয়নপত্র কিনবেন এবং জমাও দেবেন। শেষ পর্যন্ত যদি সমঝোতা হয়, তাহলেই জামাত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবে।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপির মহাসচিব জামাতকে বলেছেন, ২০ দলীয় জোটগত ভাবে নির্বাচন করলে জামাতকে ৬ টি কাউন্সিলর পদ ছেড়ে দেওয়া হবে। জামাত অবশ্য ৩৬ টি কাউন্সিলর পদেই তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বলে জানিয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin