moududh_ahmedh

‘মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে সরকার গণতন্ত্রকে ধূ‌লিসাৎ করেছে’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে বোঝাই, দেশে স্বাধীন গণতন্ত্র থাকবে, আইনের শাসন, প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা থাকবে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকবে, দেশে একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ থাকবে। কিন্তু আজকে সরকার যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বেশি বলে, তারাই আসলে এই চেতনা বলতে যে মূল্যবোধ, আশা, আকাঙ্ক্ষা মানুষের মধ্যে রয়েছে তা একেবারে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। দেশে কোনো গণতন্ত্র নাই, আইনের শাসন নাই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই।’

এ সময় মওদুদ আহমদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানান।

আনিসুল হক অত্যন্ত ভালো, কর্মঠ, সজীব, সজ্জন মানুষ ছিলেন মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ আরো বলেন, দল হিসেবে মতপার্থক্য থাকতে পারে; কিন্তু এটা বলার অপেক্ষা রাখে না তিনি কতগুলো মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে। পরবর্তী সময়ে যাঁরা করপোরেশনের দায়িত্বে আসবেন, তাঁরা তাঁকে অনুসরণ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের সভাপতি শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক লায়ন সাইফুল ইসলাম সেকুল, এস এম মাহবুব আলম, কামরুল খান, এম এ হাসেম, সোলায়মান, এ কে আজাদ, সেলিম ভুইয়া, মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।

নিম্ন আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে : মওদুদ

দেশের নিম্ন আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এ কারণেই বিচারকরা আজ আর ‘নিজেদের ইচ্ছামতো’ আদেশ দিতে পারছেন না।

আজ শুক্রবার সকালে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ শেষে সাবেক আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং প্রতি সপ্তাহে আদালতে হাজিরা দেওয়ারও সমালোচনা করেন।

লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর জিয়া জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিচ্ছেলেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বারবার তাঁর স্থায়ী জামিনের আবেদন জানালেও আদালত তা নাকচ করে দেন।

গতকাল বৃহস্পতিবারও এক মামলায় রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হরতাল চলাকালে নিরাপত্তার কারণে তিনি সকালে আদালতে যেতে পারেননি। পরে তাঁর আইনজীবীরা দুপুরের পর আদালতে হাজির হওয়ার আবেদন জানান।

কিন্তু বিচারক সময়মতো আদালতে হাজির না হওয়ায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকাবস্থায়ও একই আদালত দুই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। দেশে ফিরে পরপরই তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন এবং নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন ৬ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় বিস্ময়প্রকাশ করেন মওদুদ আহমদ। বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আমার ৫০ বছরের অভিজ্ঞতায় কোনোদিনও শুনিনি যে, সাপ্তাহিক জামিন নিতে হয়। সপ্তাহিক জামিন হলো বিরোধী দলের নেত্রীর জন্য আরো বেশি নির্যাতন, আরো বেশি অপমানজনক।’

‘এটা সম্ভব হয়েছে কারণ, আমাদের দেশের নিম্ন আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে। সেই কারণে তাঁরা (বিচারক) আজকে এই ধরনের আদেশ দিয়েছেন।’

সাবেক আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কাল অর্ধদিবস হরতালের কারণে খালেদা জিয়া আদালতে যেতে পারেননি। আদালতে বলা হয়েছে, তিনি (খালেদা জিয়া) আসবেন ২টার পরে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আদালত তাঁর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিলেন। এ ধরনের আচরণ আমরা বিচার বিভাগ থেকে প্রত্যাশা করিনি।’

‘প্রকৃত সত্য হলো, যেহেতু বিচারকদের স্বাধীনতা নেই ফলে তাঁরা নিজেদের ইচ্ছামতো আদেশ দিতে পারছেন না। ফলে তাঁরা এই ধরনের আদেশ দিতে বাধ্য হচ্ছেন’, যোগ করেন মওদুদ।

আদালত খুব খারাপ একটা দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মওদুদ। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে ফেরার পর যখনই আদালত ডেকেছেন তখনই তিনি গেছেন, আদালতকে যত রকম সম্মান দেখানোর দরকার তা তিনি দেখিয়েছেন। তারপরও তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বিস্ময়কর।’

সূত্র: ntvbd

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin