মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথ সন্ধ্যায়

বর্তমান সরকারের চার বছরের মাথায় এসে আরেক দফা সম্প্রসারণ হচ্ছে মন্ত্রিসভা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনরত নারায়ণ চন্দ্র চন্দ পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হচ্ছেন। আর রাজবাড়ীর সাংসদ কাজী কেরামত আলী এবং লক্ষ্মীপুরের সাংসদ এ কে এম শাহজাহান কামাল শপথ নিতে ডাক পেয়েছেন বঙ্গভবনে। পাশাপাশি বঙ্গভবনে ডাক পেয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বারও।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বঙ্গভবনে তাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ সময় উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।

মন্ত্রিসভা থেকে কেউ বাদ পড়বেন কি না তা এখনো জানা যায়নি। তাছাড়া নতুন শপথ নেয়া মন্ত্রীরা কী দপ্তর পাচ্ছেন সেটাও এখনো নিশ্চিত নয়।

মন্ত্রিসভায় আসছে নতুন তিন মুখ

বঙ্গভবনে ডাক পেয়েছেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী। সোমবার ফোন পেয়ে তিনি ঢাকার পথে রওয়ানা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকাটাইমসকে।

কাজী কেরামত আলী রাজবাড়ী-১ আসনটি নিজের করে নিয়েছেন বহু বছর ধরে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন মিলিয়ে তিনি মোট চারবার নির্বাচিত হয়েছেন এই আসন থেকে। তিনি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন।

সোমবার ঢাকাটাইমসকে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি মন্ত্রিসভায় আসতে যাচ্ছি, এটা দুই দিন আগে থেকেই জানি। আজ যখন রাজবাড়ী থেকে ঢাকায় ফিরছিলাম তখন দুপুর দুইটার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কল করা হয়েছিল।’

মন্ত্রিসভায় ডাক পাচ্ছেন, এই বিষয়টি আগেই নিশ্চিত করলেও কোন মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন, এ বিষয়ে কিছু জানাননি কেরামত আলী। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দেবেন, সেই দায়িত্ব পালনেই প্রস্তুত তিনি।

মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বারকেও ডাকা হয়েছে বঙ্গভবনে। তাকেও সরকারে পদে দেয়া হচ্ছে। তিনি বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়েই দায়িত্ব পেতে পারেন বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে সরকারের নানা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সদস্যও। নানা সময় তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে সরকারের নানা উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মোস্তাফা জব্বার। পাশাপাশি এই খাতে আর কী কী করা যায়, সে বিষয়েও নানা সময় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন লক্ষ্মীপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল। টানা দুবার ক্ষমতায় আসার পর এবারই প্রথম আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের কোনো সংসদ সদস্য।

পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণচন্দ্র চন্দ পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে চলেছেন। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছায়েদুল হকের মৃত্যুতে তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।

খুলনার ডুমুরিয়া এলাকার জনপ্রিয় স্কুলশিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য হয়েছিলেন ওই আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সালাউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া খুলনা-৫ আসনের ‍উপনির্বাচনে। ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বরের ভোটে জিতলেও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি হেরে যান। আর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আসনটি আবার নিজের করে নেন চন্দ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত জন। এরপর তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।

চতুর্থ দফায় মন্ত্রিসভায় রদবদল

২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ গ্রহণের পর এখন পর্যন্ত সরকারে নতুন মুখ বা দপ্তর পরিবর্তন হয়েছে তিন দফা। এবার নিয়ে চতুর্থ দফায় রদবদল হচ্ছে।

২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এইচ মাহমুদ আলীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নজরুল ইসলামকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।

প্রায় দেড় বছর পর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই মন্ত্রিসভায় যোগ হয় নতুন পাঁচ মুখ। প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী হন একজন।

সেদিন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তিনি তার আগের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েই দায়িত্ব পালন করছেন।

একই দিন মন্ত্রী হিসেবে আরও শপথ নেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তারানা হালিম (ডাক ও টেলিযোগাযোগ) এবং নুরুজ্জামান আহমেদ (খাদ্য)।

এরপর মন্ত্রিসভায় আরও একটি রদবদল হয়। সেটি চমকের তৈরি করে দেশজুড়ে। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সৈয়দ আশরাফকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। একই দিন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বদলে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। এক সপ্তাহ পর সৈয়দ আশরাফ পান তার নতুন মন্ত্রণালয় জনপ্রশাসন।

(ঢাকাটাইমস

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin