ভোট চাইতে গিয়ে প্রার্থীর গলায় জুতার মালা

ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে ২৭২ কিলোমিটার দূরে ধর জেলায় ভোট চাইতে গিয়ে জুতার মালা পরতে হল এক বিজেপি প্রার্থীকে। রাজ্যটির আসন্ন পঞ্চায়েত ও পৌরসভার নির্বাচনে এদিন সকালে ধামন্ড এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে থাকেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী দীনেশ শর্মা। এসময়ই তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়।

এই নিয়ে একটা ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায়- এক ব্যক্তিকে দীনেশের দিকে এগিয়ে গিয়ে তার গলায় জুতার মালা পরাতে যাচ্ছেন, সেসময় দিনেশ নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে ওই ব্যক্তি তার পিছন দিকে দিয়ে সেই মালা পরিয়ে দেয়।

ওই ঘটনার পরই দলের লোকেরা ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলে। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি জানান এলাকায় দীর্ঘদিনের পানির সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই তিনি এমন কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে পানির খুব সমস্যা। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ জানানো হয়েছে। আমাদের নারীরা চেয়ারপার্সনের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে উল্টে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর পুলিশের তরফে নারীদের ডেকে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদেই আমি এই কাজ করেছি।

উল্লেখ্য, আগামী ১৭ জানুয়ারি পঞ্চায়েত ও পৌরসভা মিলিয়ে ১৯ টি সিভিক বডিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে ১২০০ গরুর মৃত্যু, গো-প্রেমীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

‘পবিত্র’ গরুর মড়ক লেগেছে বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে। গরু মারলে যারা হই হই করে ওঠেন, সেই বিজেপি-র হাতে থাকা গ্বালিয়রের সরকারি গোশালায় গরুর মড়ক লাগায় বিব্রত রাজ্য সরকার আর শাসক দলের ‘পকেট’-এর পুরসভার মধ্যে ‘ইট ছোড়াছুড়ি’ শুরু হয়ে গিয়েছে।

চলছে চাপান-উতোর। দায় এড়াতে গ্বালিয়র পুরসভা দোষ চাপাচ্ছে সরকারি কেয়ারটেকারের ঘাড়ে! আর সরকারি কেয়ারটেকাররা বলছেন, ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ পুরসভারই!

ঘটনা হল, গ্বালিয়র পুরসভা এলাকার সরকারি গোশালায় গত ৪ মাসে ১,২০০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। মানে, ফি মাসে গড়ে ৩০০টি গরু মরেছে খাস সরকারি গোশালাতেই! রহস্যজনক ভাবেই।

শুধু তাই নয়, একটা গরু মারলে বা তাকে কসাইখানায় নিয়ে যাওয়া হলে যখন গোরক্ষকরা তুমুল হই চই বাধাচ্ছেন, মারধর করছেন, হচ্ছে খুনোখুনি আর তা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ একের পর এক ঘটনায়, তখন গ্বালিয়রের সরকারি গোশালায় যে গত ৪ মাসে ‘পবিত্র’ ১,২০০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে, সেই খবর ধামাচাপা দেওয়ার যথাসম্ভব চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে ‘গোপ্রেমী’ বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার।

স্থানীয় বাসিন্দারা খানদশেক গরুর কঙ্কাল, হাড়গোড়ের হদিশ আর দুর্গন্ধ না পেলে ‘কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরতো’ না! কাকপক্ষীও টের পেত না!
স্থানীয় বাসিন্দাদের দৌলতে সেই খবর জানাজানি হওয়ার পর গোশালার সরকারি কেয়ারটেকার আর গ্বালিয়র পুরসভার মধ্যে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

গ্বালিয়র মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের পশু চিকিৎসক উপেন্দ্র যাদব বলেছেন, ‘বেশ কয়েকটি গরুর অটোপ্‌সি করে দেখা গিয়েছে, তারা পলিথিন, সিঁদুর আর কাচের টুকরো খেয়েছিল।’ তার প্রশ্ন, সরকারি গোশালায় এই সব ঢোকে কী ভাবে? কী করছিলেন সরকারি কেয়ারটেকাররা?

এত গরু মরার খবর ধামচাপা দেওয়ার চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন।
গ্বালিয়র শহরের মেয়র বিবেক নারায়ণ সেজওয়াকার বলেছেন, ‘শুধুই গরু মরেনি। মোষ মরেছে, বাছুর মরেছে। যাঁড় মরেছে। আর সেগুলি ছিল স্থানীয় গ্রামবাসীদের। গোশালার নয়। অন্ত্র ও পাচন নালীর পথ সেই পলিথিন রুখে দিয়েছিল বলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।’

সরকারি কেয়ারটেকার স্বামী ঋষভানন্দের কথায়, ‘গোশালার যা কাঠামো আর যে ভাবে অত গাদাগাদি করে গরু রাখা হয় সেখানে, তাতে এমন ঘটনা না ঘটলেই অবাক হতে হত। সুস্থ আর অসুস্থ গরুদের একই সঙ্গে পাশাপাশি রাখা হয় গোশালায়। ফলে সুস্থ গরুদেরও অসুস্থ হয়ে পড়তে বিশেষ সময় লাগে না।’

সমাজকর্মী সুধীর সাপরা বলেছেন, ‘পুরসভা অনর্থক কেয়ারটেকারের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। অনাহার আর চিকিৎসার অভাবেই দেদার গরু মরেছে।’

Check Also

মুখ ফিরিয়ে নিলেন আত্মীয়স্বজন, হিন্দু বৃদ্ধের সৎকার করলেন মুসলিম যুবকরা

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় ভারতের বুলন্দশহরের বাসিন্দা রবিশংকরের। অথচ প্রতিবেশীরা মনে করেন করোনা সংক্রমণের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin