ভৈরবে ইতালিফেরত এক ব্যক্তির মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইতালি থেকে আসা এক ব্যক্তির (৬০) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন মৃত ব্যক্তির চারপাশের ১০টি ঘর এবং দুটি বেসরকারি হাসপাতালের মানুষের চলাচল সীমিত করেছে। ঘটনার রাতে দুই হাসপাতালে যাঁরা কর্মরত ছিলেন, তাঁদের হাসপাতালের ভেতরেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে মৃত ব্যক্তির বাড়ির চারপাশেও।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই ব্যক্তি দেড় যুগ আগে ইতালিতে যান। তাঁর দুই ছেলে বর্তমানে ইতালিতে আছেন। ইতালির পরিস্থিতি নাজুক পর্যায়ে যাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন তিনি বাড়ি ফিরে আসবেন এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে আসেন। তবে ওই ব্যক্তি ইতালি থেকে ফেরার বিষয়টি উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির নজরে আনেননি। এমনকি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কোনো হাসপাতালেও যাননি এবং এলাকায় স্বাভাবিক চলাফেরা করছিলেন।

প্রতিবেশীরা এই নিয়ে শঙ্কিত থাকলেও তিনি লোকলজ্জার কারণে সরাসরি কিছু বলেননি। শনিবার থেকে ওই ব্যক্তি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে রাত নয়টার দিকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর চিকিৎসকেরা তাঁর পরিবারের সদস্যদের তাঁকে হৃদ্‌রোগের চিকিৎসা করাতে পরামর্শ দেন। এ অবস্থায় ওই হাসপাতাল থেকে তাঁকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

হাসপাতালে না গিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করলেও ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে যেতে কিংবা বাড়িতে কোয়ারেন্টিন করতে বলা হয়েছিল কি না, তা জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর বলেন, তিনি তো এসেছেন ২৪ দিন আগে। তখন তো এই সমস্যা ছিল না। এই কারণে তেমন কিছু বলা হয়নি। ওই জনপ্রতিনিধি জানান, ওই ব্যক্তি নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়েছেন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘ওই ব্যক্তি আমাদের তালিকার বাইরে ছিলেন। জেনেছি, তিনি নিজে হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জেনেছি, তাঁর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। নমুনা সংগ্রহের জন্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তারা আসছে। যে নিয়মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির দাফনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়, এই মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin