‘বিগ বস’ একটি টিভি রিয়েলিটি অনুষ্ঠান। ভারতীয় কালারস টিভিতে অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানের হোস্ট সালমান খান। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রিয় অনুষ্ঠান এটি। রাত ১১টায় শুরু হয় অনুষ্ঠানটি। খুব জরুরি কাজ না থাকলে, বেগম জিয়া খুব মনোযোগ দিয়েই অনুষ্ঠানটি দেখেন। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত স্টাফরা প্রথমে মনে করেছিলেন, নায়ক সালমান খান বেগম জিয়ার প্রিয় তারকা। এজন্যই বোধ হয় তিনি বিগ বস দেখেন। কিন্তু পরে তাঁদের ভুল ভাঙ্গে। এই অনুষ্ঠানের হোস্ট হলেও সালমান সারাক্ষণ অনুষ্ঠানে থাকেন না।
অনুষ্ঠানটি এরকম যে কয়েকজনকে একটি বাড়িতে থাকতে হয়। এই বাড়িটি পৃথিবীর সব খবর থেকে বিচ্ছিন্ন। যারা এখানে থাকছেন, তাদের বাইরের সঙ্গে কোনো যোগোযোগ নেই। বাইরের কারোর সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাৎ নেই। পৃথিবীর কোথায় কি হচ্ছে এই খবরও তাঁরা পায় না। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা মোবাইল ফোন তো দূরের কথা ল্যান্ডফোনেরও সুযোগ পান না।
একটি বাড়িতে তাদের নিজেদের রান্না করে খেতে হয়। বিগবসের নিয়ম মেনে চলতে হয়। ‘বিগ বস’ এক অদৃশ্য কর্তা। তার নির্দেশই এখানে শেষ কথা। প্রতি সপ্তাহে একজনকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এভাবেই অনুষ্ঠানের শেষে একজন বিজয়ী হবেন। এরকম একটা তরুণ তরুণীদের ঝগড়া ফ্যাসাদের অনুষ্ঠান হঠাৎ বেগম জিয়ার প্রিয় হয়ে উঠল কেন?
লন্ডন থেকে ফেরার পর এমনিতেই ব্যস্ত সময় বেগম জিয়ার। দল গুছানোর কাজ, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ততা প্রতিদিন বাড়ছে। আগামী নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ, ৩০০ আসনের মনোনয়ন নির্ধারণ-ইত্যাদি অনেক কাজ তাঁর সামনে। তাছাড়া প্রতি সপ্তাহে কোর্টে হাজিরা দেওয়া তো আছেই। অথচ এসব তাবৎ ব্যস্ততা ভুলে, রাত ১১ টায় বেগম জিয়া কেন টেলিভিশনের সামনে বসে বিগ বস দেখেন?
বেগম জিয়ার ব্যাক্তিগত একজন স্টাফ মনে করেন, সামনে যদি তাঁকে (বেগম জিয়াকে) জেলে যেতে হয় তাঁর প্রস্তুতির জন্যই হয়তো বিগ বস দেখছেন। বিগ বসে কয়েকজন মানুষ বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে বসবাস করছেন। এটা একধরনের জেল জীবন। মোবাইল, টেলিভিশন এবং জগৎ সংসারের সব খবর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভালো থাকার কৌশলগুলো রপ্ত করতেই কি বেগম জিয়া বিগবস দেখছেন?
অবশ্য শেষ পর্যন্ত যদি বেগম জিয়াকে দণ্ডিত হয়ে জেলে যেতেও হয়, তাহলেও বিগবসের মত এতটা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হবে না তাঁকে। জেলে গেলে তিনি টেলিভিশন দেখার সুযোগ পাবেন। পাবেন দৈনিক পত্রিকা। আর তখন জেলে মোবাইলে সীমিত আকারে কথা বলারও সুযোগ পাবেন তিনি। তবে যেটা পাবেন না সেটা হলো বিগবস দেখতে। কারণ জেলে টেলিভিশনে শুধু দেশীয় চ্যানেলই দেখানো হয়।
বাংলা ইনসাইডার