বেগম জিয়ার জেল না দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে বিএনপি। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ ককাস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও সিনেটরদের কাছ থেকে একটি আবেদন স্বাক্ষরের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, ‘বেগম খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি, রাজনৈতিক মামলায় হয়রানির উদ্দেশ্যে তাঁর বিচার হচ্ছে। বেগম জিয়া যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার না হন সেজন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এরকম একটি লিখিত আবেদনে ব্রিটিশ এমপি, মন্ত্রী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের স্বাক্ষর গ্রহণ শুরু হয়েছে। হুবহু একই রকম একটি বিবৃতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট সদস্যদেরও স্বাক্ষর গ্রহণের চেষ্টা করছে বিএনপি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এরকম স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে, ব্রিটেনে এখন পর্যন্ত কোনো ব্রিটিশ এমপি এরকম বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি। বিএনপির কয়েকজন নেতা রুশনারা আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা বিবৃতিতে ব্রিটিশ এমপির স্বাক্ষর চান। কিন্তু রুশনারা আলী এটিকে ‘সাবজুডিস’ (বিচারাধীন) বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে এতে স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানান।
লন্ডন বিএনপির কিছু নেতা এ ব্যাপারে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালেও কথা বলেন। কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পূর্ব অনুমিত বিষয়ে বিবৃতি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। যুক্তরাজ্য বিএনপির মহাসচিব কওসার চৌধুরী স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘প্রহসনের মামলার মাধ্যমে ম্যাডামকে নির্বাচনের অযোগ্য করার পাঁয়তারা চলছে।
এর বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের চেষ্টা করছি।’ তিনি মনে করেন, ‘এটা স্বাভাবিক একটি প্রতিবাদ প্রক্রিয়া।’
তবে গত নভেম্বর থেকে চেষ্টা চালিয়েও উল্লেখযোগ্য কারও স্বাক্ষর না পাওয়ায় হতাশ বিএনপির একাংশ। তারা মনে করছেন, এতে বেগম জিয়ার ভাবমূর্তি আরও ক্ষুন্ন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলে এরকম ধারণা তৈরি করা হচ্ছে যে, বিএনপি স্বাভাবিক বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
এসব স্বাক্ষর সংগ্রহ অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্য শাখা বিএনপির একজন নেতা। তাঁর মতে, ‘আমরা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার বন্ধেও পিটিশান ক্যাম্পেইন করেছিলাম। লাভ হয়নি।’ তাঁর মতে, ‘যেটা করা দরকার সেটা হলো আন্দোলন, অথচ সেটিই হচ্ছে না।’
বাংলা ইনসাইডার