বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া বিনা চ্যালেঞ্জে আগামী নির্বাচন ছেড়ে দেবেন না। সরকারের কাছ থেকে একটি গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের জন্য জাতীয়-আর্ন্তজাতিকভাবে যত চাপই রাখুন না কেন সরকারি দলকে ফাঁকা মাঠে আরেকটি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করার সুযোগ দিতে নারাজ।
দলের নানা মহলে আলোচনা করে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সামনে এখন কেবলই আগামী জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি তিনি নিচ্ছেন। প্রার্থী চূড়ান্তকরণ থেকে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও দলীয় ভোট বাজেট নিয়ে জোরেশোরে কাজ করছেন।
এমনকি আগামী নির্বাচনে এমন প্রার্থীদের জন্য ও দলীয় আসন ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করছেন যারা আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলের সঙ্গে ছিলেন। খালেদা জিয়া মনে করেন জনমত তার অনুকূলে। সরকার বিরোধী অসন্তুষ রয়েছে মানুষের মধ্যে।যদিও তিনি সংসদ ভেঙ্গে দেয়া এবং নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন আদায়ের দাবী অব্যাহত রাখনছন, কিন্তু বিকল্প হিসেবে নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করাকেই নাম্বার ওয়ান অগ্রাধিকারে রেখেছেন।
তাকেও যদি সরকার নির্বাচন থেকে দূরে রাখে বা কারাবন্দি করে তাহলেও কিভাবে দল নির্বাচন করবে সেই রূপরেখাও তৈরি করছেন। এক কথায় আগামী নির্বাচন ৫ জানুয়ারির মতো সরকারি দল ওয়াক ওভার পাচ্ছে না। জনমত সংঘটিত করে ব্যালট যুদ্ধে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বৃহৎ জোট গঠনের প্রক্রিয়াও অব্যাহত রেখেছেন। নির্বাচন ঘিরে চলছে সামগ্রিক কর্মকান্ড।
বিএনপির অনেকে আন্দোলনের কথা বললেও খালেদা জিয়া নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, আন্দোলন নয়, নির্বাচনই এখন একমাত্র লড়াইয়ের পথ। সেটিই প্রস্তুতি নিচ্ছি।জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের উপদেষ্টা পরিষদ ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় কম পরিকল্পনা বিষয়ে তার এমন মনোভাবের কথা তুলে ধরেছেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, সংসদ ভেঙ্গে দিলেই বিএনপি নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাসও একই সুরে রোববার এক আলোচনা সভায় বলেছেন, আগাম নির্বাচন হলেও বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। ক্ষমতাসীনারা বেগম খালেদা জিয়া জেলে নিয়ে নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে এমন অভিযোগও করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষমতাসীনরা বিএনিপর নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাবের বিষয়ে আগ্রহ না দেখালেও দলটির শীষ নেতৃত্ব পর্দার অন্তরালে জোরেশোরে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আন্দোলনের ওপর জোর না দিয়ে সরকারের ওপর নানা উপায়ে চাপ প্রয়োগের কৌশলে এগুতে চাইছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে আসন ভিত্তিক সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদেরকেও নির্বাচনের জন্য প্রস্ততি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক তৎপরতারও শুরু করেছেন। অনেককেই সুবজ সংকেতও দেয়া হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নির্বাচনকালীন একটি সহায়ক সরকারের দাবী তুলে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে আসছে। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির এই দাবীর প্রতি এখনও কোনো আগ্রহ দেখায়নি। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তারা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উৎসঃ পূর্বপশ্চিম