‘বিএনপি দিনে নয়াপল্টন, রাতে গুলশানে আটকা’

বিএনপির জন্য আন্দোলনই এক মাত্র পথ বলে জানিয়ে দিয়েছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিএনপির জন্য আন্দোলনই এক মাত্র পথ। অথচ প্রধানমন্ত্রী কথার জালে বিএনপিকে দিনে নয়াপল্টন এবং রাতে গুলশান অফিসে আটকে রেখেছে।

এছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বুদ্ধির ‘প্রশংসা’ করে বলেন, প্রজ্ঞার দিক থেকে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন এক সময়ের চীনপন্থী বাম নেতা।

একই অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাকে উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কথার জালে বিএনপিকে বেঁধে ফেলেছেন। এ থেকে বের হয়ে এসে আন্দোলনে নামতেও ফখরুলকে তাগাদা দেন তিনি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, সবাই আজ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ তবে আমি ততোটা ক্ষুব্ধ নই। কারণ ইতিমধ্যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় উনি উনার পিতাকে ছাড়িয়ে গেছেন।

বিএনপির জন্য আন্দোলনই এক মাত্র পথ। অথচ প্রধানমন্ত্রী কথার জালে বিএনপিকে দিনে নয়াপল্টন এবং রাতে গুলশান অফিসে আটকে রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথার ফাঁদে পড়ে আন্দোলন ব্যাহত না করতে বিএনপিকে পরামর্শ দেন তিনি।

প্রশংসার পাশাপাশি শেখ হাসিনার সমালোচনাও করেন জাফরুল্লাহ। বলেন, শেখ হাসিনা ‘সুষ্ঠু’ নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছেন। বলেন, আপনি বলেছেন প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আর হবে না, তাহলে ভয়টা কোথায়?।

গত বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, কিছু অসঙ্গতিপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেছেন, বিএনপি নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে। আসলেই কী এটা উনার বক্তব্য নাকি ভারতের কারো কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশ?।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ক্ষমতা দখলের আভাস: খসরু

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে গণতন্ত্রে লেশ মাত্র নেই। তার বক্তব্যে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব ফুটে উঠেছে। সেই বক্তব্যে উঠে এসেছে আগামী নির্বাচন হবে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া।

কিন্তু আমি নিশ্চিতভাবে বলতে চাই- বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ও ভোটাধিকার বার বার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখলের লড়াই আর সফল হবে না। কেননা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। এটা বুঝতে পেরেই আজকে আওয়ামী লীগ গুম, খুন হত্যার রাজনীতি বেছে নিয়েছে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর মুক্তি দাবিতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদল এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, যুবদল ঢাকা উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

দেশে অন্যায়, অবিচার, গুম, খুন এবং মিথ্যা মামলার রাজত্ব চলছে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সরকার আগামীতে আবারও ক্ষমতা দখলের লড়াই করতে চায়। কিন্তু তাদের ক্ষমতা দখলের লড়াই আর সফল হবে না।

আমির খসরু বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের নির্ভরশীলতা পুরোপুরি রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর। জনগণের কাছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় জনগণ তাদের সাথে নেই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার গোটা দেশকে একটি জেলখানায় পরিণত করেছে। যার প্রমাণ আজকে যুবদলের নেতা রফিকুল আলম মজনুকে জেলে নেয়া হয়েছে। তাকে হয়তো ছোট জেলে নেয়া হয়েছে কিন্তু সমস্ত দেশকে জেলখানায় পরিণত করেছে সরকার। দেশের সাথে সমস্ত মানুষ বৃহত্তর জেলখানায় বসবাস করছে। তার কারণ সরকারের টিকে থাকার শেষ ভরসাস্থল হচ্ছে গুম, খুন, মিথ্যা মামলা ও জেলজুলুম।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে গেছে। কারণ তারা জনগণের কাছে যেতে পারবে না। জনগণের কাছে তাদের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। সে কারণে বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির জনপ্রিয়তা সরকারকে আরও বেশি বেপরোয়া করে তুলেছে।

সৌদি আরবে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের অভিযোগ তোলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কীভাবে বিএনপি আইনি ব্যবস্থা নেবে-মির্জা ফখরুলের কাছে এই প্রশ্নও রাখেন জাফরুল্লাহ।

বিএনপি মহাসচিবকে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। প্রশ্নটা হচ্ছে আপনি কোন বিচারকের কাছে বিচার চাইবেন, সেই বিচার বিভাগ ও বিচারকদের সেই বিবেক কি আছে?’ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘তারা তো বিচারের আগেই ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।’

rtnn

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin