বিএনপির প্রার্থী তাবিথ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে মেয়র পদে তাবিথ আউয়ালই পাচ্ছেন বিএনপির টিকিট। আগামী শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশন গতকাল মঙ্গলবার উত্তর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।  আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আসন্ন এ উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে কিছু দিন ধরেই নানামুখী আলোচনা চলছে। বিগত ডিএনসিসি নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল। যদিও ওই নির্বাচনে বিএনপির পছন্দের প্রার্থী ছিলেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু। তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় তাবিথ আউয়াল দলের টিকিট পেয়ে যান।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলের ওই নির্বাচন শুরুর তিন ঘণ্টা পর কারচুপির অভিযোগে বিএনপি ভোট বয়কট করলেও তাবিথ আউয়াল ৩ লাখ ২৫ হাজার ভোট পান।  এবার বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আরও দুইজন নেতা। এরা হলেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও সহ-প্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ।

জানা গেছে, বিএনপির নির্বাহী কমিটির তরুণ নেতা তাবিথ আউয়াল দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন ধরে নিয়েই বেশ কিছু দিন ধরে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নানা প্রস্তুতি শুরু করেছেন। নির্বাচনের অফিসও নেয়া হয়েছে তেজগাঁওয়ের ৪১৯/৪২০ নম্বর ভবনে। এ প্রসঙ্গে তাবিথ আউয়াল নয়া দিগন্তকে বলেন, একজন প্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। আশা করছি, প্রত্যাশীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীকেই বিএনপি মনোনয়ন দেবে।

বিগত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনকে আসলে প্রকৃত নির্বাচন বলা যায় না। এ ক্ষেত্রে তিনি রাজধানীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনবার হামলা, প্রকাশ্যে সিলমারা, কারচুপির মতো বিষয়গুলো উল্লেখ করেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী এমন প্রশ্নে তাবিথ আউয়াল বলেন, আশাবাদ তো রাখতেই হয়। নতুন নির্বাচন কমিশন এসেছে। তারা কিভাবে দায়িত্ব পালন করে সেটিও দেখতে হবে। দলের মনোনয়ন পেলে নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ায় আমরা থাকব। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ভোট হলে ধানের শীষের প্রার্থীর বিজয় হবে। আগামীতে ঢাকার উন্নয়নে, রাজধানীকে বাসযোগ্য করতে নগরবাসীর যে প্রত্যাশা সেটি আমি পূরণে সক্ষম হবো।

মনোনয়নের দৌড়ে তাবিথ আউয়াল এক নম্বরে থাকলেও তাকে নিয়ে দলে কিছুটা সমালোচনাও স্থান পেয়েছে। বিগত নির্বাচনের পর নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্ক ভালোভাবে রক্ষা না করা কিংবা জনগণের পাশে না দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ কথা বলছেন।

কোনো কোনো নেতার মতো হচ্ছে- বিগত নির্বাচনে তাবিথ আউয়াল বিএনপির মূল প্রার্থী ছিলেন না, দলের প্রার্থী ছিলেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু। তিনি নির্বাচনে অযোগ্য না হলে তাবিথ আউয়ালের আসার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। এবার যেহেতু পরিস্থিতি ভিন্ন সেহেতু বিএনপির অনেক সুযোগ্য নেতার মধ্য থেকে প্রার্থী বাছাই করে সবচেয়ে যোগ্য নেতাকে প্রার্থী করা উচিত হবে।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় থাকা বিএনপির সিনিয়র নেতা বরকত উল্লাহ বুলু নিজের প্রার্থিতা নিয়ে এখনো প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে দলের একটি অংশ মনে করছেন, চারদলীয় জোট সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা, সাবেক এমপি ও যুবদলের সভাপতি হিসেবে বরকত উল্লাহ বুলু সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। দেশব্যাপী তার পরিচিতি রয়েছে। তাকে মনোনয়ন দিলে ভালো ফল হতে পারে।

আরেক প্রার্থী শাকিল ওয়াহেদ নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। ঢাকায় লাগানো হয়েছে তার পোস্টার। ফেসবুকে প্রচারণা চলছে। বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবী ও ব্যবসায়ীদের একটি অংশ শাকিল ওয়াহেদকে মেয়র পদে যোগ্য মনে করছেন।

শাকিল ওয়াহেদ এ নিয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, দল তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি যোগ্য প্রার্থী হিসেবেই ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন। এ দিকে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, উপনির্বাচনে জোটগতভাবেই প্রার্থী দেয়া হবে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থিতা নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই। চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার পর তার পক্ষেই সবাই একযোগে মাঠে নামবে।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin