bnp-flag

বিএনপির নেতাকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিল কর্মীরা

হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহের সামনে থেকে আটক বিএনপির ২ নেতাকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিল যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের গাড়ি ও রাইফেল ভাংচুর করে তারা।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কদম পোয়াড়ার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। সে সময় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

আদালতে যাওয়ার সময় তার গাড়িবহর থাকা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল নেতাকর্মীরা কদম পোয়াড়ার মোড়, হাইকোর্টের বাজার এলাকার আশেপাশে অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশ তাদের একাধিকবার ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেখান থেকে পুলিশ বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাসির ও সোহাগ মজুমদারকে আটক করে। তাদের পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিরোধ করে নেতাকর্মীরা।

এসময় পুলিশের গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং নেতাদের ছিনিয়ে নেয়া। পুলিশের একটি রাইফেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার ৭ বছরের কারাদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্কের সারমর্ম উপস্থাপন করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারাদণ্ড চেয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী।

এর আগে হাজিরা দিতে মঙ্গলবার বিশেষ আদালতে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বেলা ১১ টা ১০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশে বেগম খালেদা জিয়া রওনা হন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে তিনি উপস্থিত হয়ে এ মামলায় হাজিরা প্রদান করেন খালেদা জিয়া। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁশলি মোশাররফ হোসেন কাজল এ মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। গত ২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান যুক্তি উপস্থাপনের জন্য এদিন ধার্য করেন।

যুক্তি উপস্থাপনে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁশলি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে (২০০১ থেকে ২০০৬ সাল) ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে ও অন্যকে লাভবান করার জন্য জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করেন।

তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় পেশার কথা লেখেননি। তিনি সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৪৭ সালের ৫(২), ধারা ও দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ৩২ জন সাক্ষির মাধ্যমে আমরা এটা প্রমাণ করতে পেরেছি। মামলায় খালেদা জিয়ার সাত বছরের সাজা চাই।

মোশাররফ হোসেন কাজল আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যে উদ্দেশ্যে ট্রাস্ট গঠন করেছেন, পরবর্তী সময়ে তা টাকা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে তা প্রাইভেট ট্রাস্টে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এপিএস হারিস চৌধুরী, পিএস ড. জিয়াউল ইসলাম মুন্না তাঁরাও সরকারি পদে ছিলেন। ট্রাস্টে তাঁরা সরকারি পদ ব্যবহার করতে পারেন না।’

এসময় খালেদা জিয়া আদালতের সামনে একটি চেয়ারে বসা ছিলেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, এ জে মোহাম্মদ আলীসহ বিএনপির নেতারা আদালতে উপস্থিত রয়েছেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ। এবছর ২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান যুক্তি উপস্থাপনের জন্য এদিন ধার্য করেন।

ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এদিকে খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

খালেদা জিয়ার হাজিরা ঘিরে আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া আদালতের প্রধান ফটকে স্ক্যানার বসিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে।

এদিকে খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin