বিএনপিতে নির্যাতনের শিকার ৩৭ লক্ষ: ফখরুল

বর্তমান সরকারের আমলে ‘গুম খুন ও নির্যাতনের শিকার’ নেতা-কর্মীদের একটি হিসাব দিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি, এই সংখ্যাটি সব মিলিয়ে ৩৭ লাখ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে রবিবার রাজধানীতে বিএনপি আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই হিসাব দেন মির্জা ফখরু।

বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘পার্টির হিসাব মতে শুধু বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৭৮ হাজার ৩২৩টি, আসামির সংখ্যা ৭ লক্ষ ৮৩ হাজার ২৩৮ জন, সরাসরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মোট খুন ৫২০ জন, অপহরণের সংখ্যা ৭৪৭ জন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন ১৫৭ জন, নির্যাতনের শিকার ৩৭ লক্ষ।’

ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং ক্ষমতায় যেতে সরকার হয় হত্যা না হয় গুম করছে।

‘ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কাছে আজ দেশের অসংখ্য পরিবার এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। যারাই সে দলটির বিরুদ্ধে ভিন্নমত প্রকাশ করছে বা করতে চাচ্ছে তাদেরকে সরকার শুধু মাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং ক্ষমতায় যেতে হয় হত্যা করছে, না হয় গুম করছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ কারাগারে পরিণত হয়েছে। মামলা, হত্যা, গুম-খুনে জর্জরিত। কারণ একটাই জোর করে রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে রাখা।’

‘শুধু তাই নয়, আজকে বিচারবিভাগকে কব্জা করে ফেলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে বাধ্য করা হয়েছে প্রথমে ছুটি পরবর্তীতে পদত্যাগে। প্রশাসনকে করা হয়েছে সম্পূর্ণ দলীয়করণ।’

বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আন্দোলনের তাগিদ দেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি মাত্র পথ। সেটি হলো গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতাসীন সরকারকে পরাজিত করার মাধ্যমে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। সেজন্য সবাইকে উঠে দাঁড়াতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে এবং দেশের মানুষ যাতে স্বস্তি পেতে পারে, মানুষকে যাতে সুশাসন দিতে পারি ঐক্যবদ্ধভাবে সেই আন্দোলন করতে হবে।’

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানও। তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকার বাংলাদেশ থেকে মানবাধিকার বিষয়টিই গুম করে ফেলেছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা কথায় কথায় বলে থাকেন বাংলাদেশ নাকি এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল। এটাই কী তাহলে বাংলাদেশের রোল মডেলের চিত্র যেখানে ভিন্নমত প্রকাশ করলে একমাত্র অপরাধ হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া?’।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জনপ্রিয়তা হারিয়ে এখন মিথ্যার ফ্যাক্টরি তৈরি করেছে। মিথ্যাচার করতে করতে তারা এখন মানবাধিকার নিয়েও মিথ্যাচার করেছে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ।

ঢাকাটাইমস

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin