bnp_jamat

বিএনপিতে দুইটি জোট আসছে

জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী জোট যুক্তফ্রন্টসহ অন্য দলগুলো নিয়ে আন্দোলনের জোট নির্দলীয় সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের চিন্ত্মা নির্বাচন ও আন্দোলন- দুই কাজের জন্য দুই ধরনের জোট করার চিন্ত্মা-ভাবনা করছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী থাকার কারণে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে যুক্ত হতে চাচ্ছে না বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

তাই মূল নির্বাচনী জোটের পাশাপাশি আন্দোলনের জন্য আরেকটি জোট গঠনের কথা ভাবছে দলটি। এনিয়ে বিএনপি নেতারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনাও শুরম্ন করেছেন।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার পর নিয়মতান্ত্রিক শান্ত্মিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। একইসঙ্গে জোট নেত্রীর সাজাকে ঘিরে আন্দোলনকে জোরদার এবং জোট সম্প্রসারণেও মনোযোগী হয় দলটি। ২০ দলীয় জোটের বাইরে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জোটের পরিধি বাড়ানোরও চেষ্টা করে।

তবে জামায়াত থাকার কারণে অনেকে বিএনপির জোটে আসতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। এজন্য নির্দলীয় সরকারের দাবিতে যেসব দল সরকারের বিরম্নদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের নিয়ে আন্দোলনের একটি জোট গঠনের চেষ্টা করছে বিএনপি।

সূত্রমতে, ২০ দলীয় জোটের বাইরে বি. চৌধুরীর বিকল্পধারা, আ স ম রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি, আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য নিয়ে গঠিত যুক্তফ্রন্টকে নিজেদের সঙ্গে আনা বিএনপির প্রথম টার্গেট। এনিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে যুক্তফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের আলোচনাও হয়েছে। তারা বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের নির্বাচনী জোটে যোগ দেবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে।

জোটে জামায়াত থাকা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি কারণে যুক্তফ্রন্ট বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে না বলে দলে বিএনপি নেতারা জানতে পেরেছেন। এরপর একসঙ্গে আন্দোলনের জন্য একটি আলাদা জোট গঠনের ভাবনা শুরম্ন করে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে যুক্তফ্রন্টসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে অনানুষ্ঠানিক ভাবে প্রস্ত্মাবও দেয়। তারা আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসার আগে আন্দোলনের মূল ইসু্যগুলো জানতে চেয়েছে। পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের দাবিসহ অন্য যেসব ইসু্য আছে তা দেখে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেয়ার মৌখিক আশ্বাস দিয়েছে।

সূত্রমতে, জামায়াত জাতীয় ঐক্য গঠনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় ২০ দলীয় জোট থেকে এই দলটিকে বাদ দিতে বিএনপির ক্ষুদ্র একটি অংশ দলীয় ফোরামে আলোচনাও করেছে। কিন্তু দলের বড় অংশটি জামায়াতকে বাদ দেয়ার বিপক্ষে। সঙ্গত কারণে জামায়াতকে রেখে যারা নির্বাচনী জোটে আসতে চাইবে তাদের জোটের অন্ত্মর্ভুক্ত করবে বিএনপি। আর খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনে অংশ নেয়ার আগ্রহ আছে যাদের তাদের আন্দোলনে জোটে অন্ত্মর্ভুক্ত করবে তারা।

গত ৮ ফেব্রম্নয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার পর এই সাজাকে কেন্দ্র করে বিশ দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করে আন্দোলনের থাকার সিদ্ধান্ত্ম নিলেও এখন পর্যন্ত্ম জোটগত কর্মসূচি আসেনি। তবে জোট নেতারা যোগ দিচ্ছেন বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচিগুলোতে।

জোটগত আন্দোলন ও এর পরিধি বৃদ্ধির বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরম্ন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে। এই ডাকে অনেকে সাড়া দিচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে কোনো নির্বাচন করা যাবে না এই ইসু্যতে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। দলীয়ভাবে কর্মসূচি চলছে। জোটের যখন প্রয়োজন হবে, তখন করবে।

এখানে কার কী রাজনৈতিক আদর্শ, উদ্দেশ্য- এটা কিন্তু কোনো বিষয় নয়। তাদের গন্ত্মব্য কিন্তু একটাই। সেটা হলো গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকার এবং নাগরিক অধিকার উদ্ধার। এ বিষয়টি মাথায় রেখে অনেক দল আন্দোলনে যোগ দেবে এটাই সবার আশা।

একই বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যন খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ২০ দলীয় জোটের বাইরে যারা আছেন তারাও মনে করেন, বৃহত্তর বা গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে সহযোগিতা করে তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের স্বাদ দেবেন।

বিএনপির সঙ্গে জোটে অংশগ্রহণ ও যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে নাগরিক ঐক্যে’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে অন্ত্মর্ভুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই যুক্তফ্রন্টের। আর আন্দোলনের বিষয়ে বলা যায়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের যে দাবি সেই দাবিতে আন্দোলনে আছে যুক্তফ্রন্ট।

বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনের জোট নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে নেতাদের সঙ্গে কথা হয়। আন্দোলনের যোগ দেয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রস্ত্মাব আসলে সে ক্ষেত্রে তাদের মূল দাবিসহ আন্দোলনে পুরো বিষয়টি জেনে যুগপৎ আন্দোলনের কথা ভাবা হবে।

যায়যায়দিন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin