khaleda_zia

বিএনপিতে উৎকণ্ঠা, মনোবল হারাবেন না তৃণমূল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। দলীয় প্রধানকে গ্রেফতার করা হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে- তা নিয়ে দলের মধ্যে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে।

খালেদা জিয়া ছাড়াও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তির গতি বাড়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সম্প্রতি খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পর কক্সবাজার সফর ও সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের পর দলীয় নেতাকর্মীরা কিছুটা উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। দলের মধ্যে কিছুটা স্বস্তিভাব দেখা গেলেও আবার তাদের মধ্যে মুক্ত রাজনীতি করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার মহানগরসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এই পরোয়ানা জারিকে সরকারের পরিকল্পিত নীলনকশার অংশ হিসেবে দেখছে দলটি। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

বিএনপি ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আজ শনিবার মহানগর ও জেলা সদরে, কাল রোববার থানা ও পৌরসভায় এবং জাতীয়তাবাদী যুবদল গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ করে। ছাত্রদল আজ শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সমকালকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে হয়রানিমূলক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তারা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া যে নির্দোষ, তা প্রমাণের চেষ্টা করবেন। নেতাকর্মীরা সাময়িক উৎকণ্ঠিত হলেও মনোবল হারাবেন না। হাজার হাজার মামলা-মোকদ্দমা মাথায় নিয়েই তারা রাজপথে আছেন এবং থাকবেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির না হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ধার্য তারিখ পর্যন্ত এই দুই মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে ছিলেন।

কিন্তু এ দিন অর্ধদিবস হরতাল থাকায় আদালতে হাজির হতে না পেরে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে সময়ের আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান বৃহস্পতিবার তার জামিন বাতিল করে পরোয়ানা জারির এই আদেশ দেন।

একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনে শুনানি শেষ করেন। পাশাপাশি বিচারের শেষ ধাপ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ৫, ৬ ও ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে রায় ঘোষণা করা হবে।

যোগাযোগ করা হলে দলের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ দলের আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে সরকার। যে কোনোভাবে তাদের আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বারবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করায় স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মনে হতাশা বাড়ছে।

এ প্রসঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু সমকালকে বলেন, বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যে জনপ্রিয়তা তা নষ্ট করতেই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ইতিপূর্বে আরও কয়েকবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।

এ নিয়ে নেতাকর্মীরা কিছুটা হতাশ ও আতঙ্কিত হলেও চেয়ারপারসন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আইনগতভাবে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি মোকাবেলা করবেন। মামলা-হামলা করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরাতে পারবে না এই সরকার।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin