bnp-flag

বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল বলা বিচারকের নিজস্ব মত: কানাডিয়ান হাইকমিশনার

কানাডার আদালতে বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যায়িত করা বিচারকের নিজস্ব মত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার। তিনি আরো বলেন, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সাথে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

বুধবার দুপুরে ঢাকায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছেন কানাডার ফেডারেল আদালত। কানাডাভিত্তিক বাংলা নিউজ পোর্টাল ‘নতুনদেশ ডটকম’ এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিএনপির সদস্য হবার কারণে একজন বাংলাদেশী নাগরিকের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে দেয়ার বিরুদ্ধে করা জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন কানাডার ফেডারেল আদালত। সে সঙ্গে দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মন্তব্য করেন ফেডারেল আদালতের বিচারক হেনরি এস ব্রাউন।

কানাডা সরকার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেনি বলে আবেদনকারীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত জানিয়ে আদালত বলেন, ‘তালিকাভুক্ত করা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। এটি ঠিক করে কানাডার গভর্নর কাউন্সিল। এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইস্যু জড়িত থাকে। আমি এ যুক্তি গ্রহণ করছি না।’

ফেডারেল আদালতের বিচারক হেনরি এস ব্রাউন গেলো ২৫ জানুয়ারি মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, বিএনপির পরিচালিত লাগাতার হরতাল এবং হরতালকে কেন্দ্র করে পরিচালিত সন্ত্রাসী তৎপরতা সম্পর্কে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

মোহাম্মাদ জুয়েল হোসেন গাজী নামে ঢাকার মিরপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। আবেদন গ্রহণ করে ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল তাকে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে প্রথম পর্যায়ের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু ২০১৬ সালের ১৬ মে তাকে কানাডায় প্রবেশের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

আবেদন নাকচ হবার পর ফেডারেল কোর্টে জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন করেছিলেন জুয়েল হোসেন গাজী। বিএনপির সদস্য হওয়ায় তাকে কানাডায় প্রবেশের অনুপযুক্ত ঘোষণা করে বলা হয়, ‘বিএনপি সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ছিল, লিপ্ত আছে বা লিপ্ত থাকবে – এটি বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ আছে’।

এ সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কানাডার ক্রিমিনাল কোডের ধারা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএনপির ডাকা হরতাল বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিএনপি কর্মীদের হাতে মালামালের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও মৃত্যু এবং আহত হবার ঘটনা ঘটে। আমি লক্ষ্য করেছি অতীতে কোনো কোনো ঘটনায় বিএনপির নেতৃত্ব নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে এবং সন্ত্রাসী তৎপরতার নিন্দা করেছে। কিন্তু বিএনপির দাবি দাওয়া সরকারকে মানতে বাধ্য করতে লাগাতার হরতালের কারণে সৃষ্ট সহিংসতা প্রমাণ করে, এটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বাইরে চলে গেছে।’

জুডিশিয়াল রিভিউর নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক উল্লেখ করে বিচারক হেনরি এস ব্রাউন বলেন, কানাডার আইনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের যে সংজ্ঞা দেয়া আছে তার আলোকে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই ওই কর্মকর্তা উপসংহারে পৌঁছেছেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin