বাসে আগুন: সন্দেহের তালিকায় ৫ নেতা

বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। দশটি বাসে আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা। এটি এখন সুস্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি থেকেই কি এই নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছে।

একটি রাজনৈতিক গতিপ্রবাহকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্যই এই প্রচেষ্টা করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিশ্চিত যে, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি বাস্তবায়নের জন্য এটা করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে বাসে আগুনের ঘটনায় রাজধানীর পল্টন এবং শাহবাগ থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সমস্ত মামলায় ১৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৫ জন। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, এই মামলায় দুই ধরনের অভিযুক্ত রয়েছেন।

প্রথমত, যারা সরাসরি এ সমস্ত হামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এবং হামলা করেছেন। দ্বিতীয়ত,যারা এই হামলার পরিকল্পনা করেছেন এবং নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করেছেন। 

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা ১৮ আসনের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত এবং উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য এই হামলা ঘটানো হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। এ নির্বাচনের আগে থেকেই নির্বাচনের দিন সহিংস ঘটনারপরিকল্পনার তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।

এই ধরনের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে বিএনপি এবং জামায়াতের ৫ নেতার নাম এখন আলোচনায় এসেছে। এরা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে যে, তারা এটা নিয়ে এখনো কাজ করছে এবং খুব শীঘ্রই এ ঘটনার মূল সূত্র ধরে ফেলতে পারবেন।

এই ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় এখন পর্যন্ত যারা আছেন তারা হলেন,

১। এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন: ঢাকা ১৮ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, এই ঘটনার অনেক আগে থেকেই তিনি উস্কানি দিয়েছিলেন যে নির্বাচনে যদি ভোটারদের ভোট দিতে না দেয়া হয় তাহলে তিনি ঢাকার শহর অচল করে দিবেন।

২। মির্জা আব্বাস: পরিকল্পনা প্রণয়ন ক্ষেত্রে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নাম এসেছে, তিনি নিজেই একজন পরিবহন মালিক এবং কোন পরিবহন গুলোতে আগুন লাগালে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে, সে সম্পর্কে তিনি ভাল বোঝেন। তার মাথা থেকেই আগুন লাগানোর ঘটনাটা এসেছে বলে অনেকে মনে করছেন।

৩। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: যুবদলের সাবেক নেতা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও পরিকল্পনার সাথে যুক্ত বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তিনি গত কিছুদিন ধরে উস্কানিমূলক বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছিলেন। সরকার পতনের জন্য চূড়ান্ত আন্দোলন করার ঘোষণাও তিনি মাত্র দু`দিন আগে দিয়েছিলেন।

৪। হাবিবুন নবী খান সোহেল: যারা বিভিন্ন বাসে হামলা করেছে তারা সবাই হাবিব-উন-নবী সোহেলের ব্যক্তিগত নিজস্ব ক্যাডার বলে একাধিক সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে। হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ঢাকা উত্তরের বিএনপি নেতা এবং ছাত্রদলের সাবেক নেতা হিসেবে তার একটা নিজস্ব সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক রয়েছে । এই সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই এই ঘটনা ঘটানো হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

৫। নুরুল ইসলাম বুলবুল: ঢাকা দক্ষিণ সিটি জামাতের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল এ ঘটনায় জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পল্টন, কাটাবন এলাকায় শিবির এবং জামাতের কর্মীরা বাসে হামলার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল, তা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

এ সংস্থাগুলো বলছে, তারা এটা নিয়ে আরো কাজ করছে এবং আরও তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছে। এসব তথ্য প্রমাণের প্রেক্ষিতেই তারা হয়ত শেষ পর্যন্ত এই সমস্ত নেপথ্যের পরিকল্পনাকারীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin