al_photo

ফের ক্ষমতায় যেতে কৌশল বদলাচ্ছে আওয়ামী লীগ

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের সরকার গঠন করতে কৌশল বদলাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এজন্য নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।

এগুলোর মধ্যে হচ্ছে, জোট সম্প্রসারণ, বিএনপিকে চাপে রাখা, উপকমিটিতে দেশের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের অন্তর্ভুক্ত করা, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখা সহ নানা কৌশল নিয়ে মাঠে নামেছে আওয়ামী লীগ।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে আওয়ামী লীগের একধিক নেতা এসব কথা বলেন। ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলো নিজ নিজ দলীয় কৌশলে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে।

ভোটের আগে জোটের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও অনানুষ্ঠানিকভাবে শরিক দলগুলোকে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের জন্য একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ খুব সহজ হবে না বলে ভোটের দুই বছর আগে থেকেই সেই বাধা পেরোতে কৌশল নিয়ে কাজ করতে হবে।

প্রয়োজনে জোট সম্প্রসারণের আভাস দিয়ে তিনি বলছেন, নির্বাচনে জয়ের জন্য আওয়ামী লীগের কৌশলগত পরিবর্তন হতে পারে। তবে শেকড় থেকে তারা কখনও সরবেন না। প্রার্থী তালিকায় অনেক নতুন মুখ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় অনেক নতুন মুখ আসতে পারে। এলাকায় যাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি তাদেরকেই প্রাধন্য দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছু আসনে আগেভাগেই নিশ্চিত জিতে আসার মতো বেশ কজন নতুন মুখকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হতে পারে, যাতে তারা এলাকায় পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান। এসব নতুন মুখের মধ্যে আছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী নেতা, সাবেক পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা, আমলা ও রাজনৈতিক নেতা।

বিএনপিকে চাপে রাখতে তৎপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দলটি বিএনপিকে বর্তমান দুরবস্থা ও চাপের মধ্যে রেখেই আগামী নির্বাচনে আনতে চায়। সে জন্য কৌশল কৌশলে কাজ করে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালেদা জিয়া সহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের রাজনৈতিক চাপে রাখতে সরকার পুরনো মামলাগুলো আবার সচল করেছে। এ জন্য তারা আদালতকে ব্যবহার করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে কৌশলে সরিয়ে রাখতে চায়।

কোনো ইস্যু করে দলটি যাতে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে আগাম সতর্ক পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এ ছাড়া বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশকে অশান্ত করার কোনো কর্মসূচি দিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীও থাকছে কঠোর অবস্থানে। এমনকি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফরের পরেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে কক্সবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশ করেছে। আবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভার পর একই স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণের ইউনেসকোর স্বীকৃতি উদযাপনে ১৮ নভেম্বর নাগরিক সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

এটি নামে নাগরিক সমাবেশ হলেও বড় জমায়েতেরই প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভার চেয়ে বড় জমায়েত দেখানোর একটা চ্যালেঞ্জ মনে করছে সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল নির্ধারণের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক প্রস্তুতির কাজও শুরু করে দিয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে আওয়ামী লীগকে কোনো শক্তি পরাজিত করতে পারবেনা।

আরটিএনএন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin