ফখরুল কি মেরুদণ্ডহীন?

ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আবার সমালোচিত হলেন বিএনপি মহাসচিব। তবে, এবারের সমালোচনা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার পক্ষ থেকে নয়। এবার মির্জা ফখরুল তোপের মুখে পরেছেন দলের নেতাদের কাছ থেকেই। বিএনপির সিনিয়র নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, যেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হবে না, সেখানে বিএনপি নেতারা যাবেন না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সামনে রেখে দলের সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘মেরুদণ্ডহীন নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলনের বিজয় অর্জিত হবে না।’ তিনি এটাও বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের প্রধান শর্ত হবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।’

ঘটনার সূত্রপাত গতকাল বুধবার। ওই দিন বিকেলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোগে ইভিএম এবং নির্বাচন নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন।

ওই অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব ছাড়া আর কেউই সরাসরি বেগম জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ আনেন নি। বরং বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী পরোক্ষভাবে বিএনপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এক স্বেচ্ছাচার থেকে আরেক স্বেচ্ছাচারে আমরা যেতে চাই না। স্বেচ্ছা চার বন্ধে প্রয়োজন ভারসাম্য। তিনি সংসদে ভারসাম্য, মন্ত্রিসভায় ভারসাম্য এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভারসাম্যের কথা বলেন।’

ড. কামাল হোসেনও তাঁর বক্তব্যে, বিএনপির অন্যতম শরিক জামাতের তীব্র সমালোচনা করেন। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ‘ঐ বৈঠকের পরপরেই জামাতের নেতা আবদুল হালিম, ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানকে টেলিফোন করেন। তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা তাদের সাথেই ঐক্য করতে চান। তাহলে ২০ দল ভেঙ্গে দেন।’

এরপর জামাত নেতা জাতীয় ঐক্যের বৈঠকের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। পরে, আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির শীর্ষ নেতারা গুলশানে দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বসেন। সেখানে গতকালের বৈঠক নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। বৈঠকে একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনরা বিএনপিকে মই বানিয়ে উপরে উঠতে চাইছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিকে পাশ কাটিয়ে কোন ঐক্য কারও সঙ্গে করবো কিনা।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা যেমন বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে যাবো না বলে ঘোষণা দিয়েছি, তেমনি ঘোষণা দিতে হবে যে, বেগম জিয়ার মুক্তির দাবি ছাড়া কারও সঙ্গে ঐক্যে যাবো না।’ বৈঠকে স্থায়ী কমিটির অনুমতি ছাড়াই, এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিএনপি মহাসচিব অবশ্য এসব সমালোচনার জবাবে বলেন, ‘দেশ বাঁচাতে ঐক্যের বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ হলে বেগম জিয়ারও মুক্তি হবে, দেশও বাঁচবে।’

বাংলা ইনসাইডার/

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin