mirja-fakhrul

ফখরুলের প্রতি গণঅনাস্থা বিএনপিতে

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি গণঅনাস্থা জানিয়েছে বিএনপি। এখন পর্যন্ত বিএনপির ৩৩ টি জেলার পক্ষ থেকে ওই জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা এই অনাস্থা সম্পর্কিত চিঠি পাঠিয়েছেন লন্ডনে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কাছে।

তারা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। একইভাবে ঢাকা মহানগরীর দুটি কমিটিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। তবে তারা আনুষ্ঠানিক ভাবে অনাস্থা উত্থাপন করেনি।

একটি সূত্রে জানা গেছে যে, এই ৩৩ টি জেলাই না, পর্যায়ক্রমে সবগুলো জেলা থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়া হবে।  এই অনাস্থার প্রধান কারণ বলা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে দলের অনিষ্পন্ন কমিটিগুলোকে চূড়ান্ত না করা। জেলা এবং স্থানীয় পর্যায়ের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোকে কার্যকর না করা।

দলের ভিতরে যারা ত্যাগী তাদেরকে মূল্যায়ন না করা । জেলা পর্যায়ে যে দলের সাংগঠনিক সমস্যাগুলো রয়েছে সে সমস্যাগুলো সমাধান না করা। অবশ্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা বলেছেন, যে বিষয়ে জেলা কমিটিগুলো অনাস্থা জানিয়েছে সেই বিষয়গুলো মহাসচিবের এখথিয়ার ভুক্ত না। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলার কমিটি বা অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো চূড়ান্ত করার ক্ষমতা একমাত্র দলের চেয়ারম্যান এবং স্থায়ী কমিটির ।

কিন্তু দলীয় চেয়ারপারসন যেহেতু এসব কমিটির ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন না, কাজেই দলের মহাসচিব এর কিছু করণীয় নাই। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায়ের প্রধান অভিযোগ হলো, যে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না।

তিনি তৃণমূলে কে কার্যকর করার জন্য, তৃণমূলের যারা কাজ করছেন তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া । তৃণমূলের কোন্দল মীমাংসা এবং ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখেন না।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, এটি দলের মহাসচিব এর কাজ। কিন্তু মহাসচিব এ দায়িত্ব পালন করছেন না। সম্প্রতি তারেক জিয়া সারা দেশের জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে স্কাইপে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হচ্ছেন। এই যুক্ত হয়েই তিনি দলের সাংগঠনিক তৎপরতাসহ নির্দেশনাবলী দলের সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে কথা বলেছেন । এ সমস্ত কথাবার্তায় জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ যে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন, তাহলো জেলা কমিটি অকার্যকর । প্রায় সবগুলো জেলা কমিটি এখনও কার্যকর। এ কমিটিতে যারা তাদেরকে রাখা হয়েছিল তারা সবাই অকার্যকর।

ওই কমিটিগুলো ১০ থেকে ১২ বছরের পুরানো। কমিটির অনেক সভাপতি মারা গেছেন, অনেকে দল ত্যাগ করছেন। অনেকে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। এমনকি দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন না কেউ কেউ। এ সমস্ত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে যারা দলের সংকটময় কালে দলের জন্য কাজ করেছেন, তাদেরকে কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি।

বিএনপির নেতৃত্ববৃন্দ মনে করছেন, জেলা কমিটির গুলো যদি কার্যকর না হয় তাহলে সংগঠন হিসেবে বিএনপির কার্যকর হতে পারবেনা। জেলা পর্যায়ের একজন নেতা বলেছেন যে, বিএনপির মহাসচিব বিএনপিকে একটি ড্রইং রুম সর্বত্র রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছেন। তিনি একটি ঘরে বসেই কিছু বক্তৃতা বিবৃতি দেন।

এই বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে রাজনৈতিক দল চলতে পারে না।  দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির জেলার কমিটি গঠন করা এবং যারা সত্যিকারে কাজ করছেন তাদেরকে মূল্যায়ন করে তাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে।

জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার থাকা অবস্থায় বিএনপিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন তারেক জিয়া। তিনি মহাসচিবকে কোন জেলায় কি অবস্থা কোন জেলা কার্যকর, কোন জেলা অকার্যকর সে সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট তালিকা চেয়েছেন। কিন্তু মহাসচিব সেই তালিকা প্রণয়ন করে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতাকে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখনো দলের মহাসচিব কোন জেলার কার্যকারীতা কি সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেন না।

জেলা পর্যায়ে সংগঠনগুলোকে কার্যকর করার ব্যাপারে তার কোনো উদ্যোগও নাই। আর এই উদ্যোগহীনতার জন্য জেলা কমিটি গুলো মনে করেন যে, বর্তমান মহাসচিব থাকা অবস্থায় দল সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে না বরং আরো দুর্বল হয়ে পড়বে। এ কারণেই তারা গণঅনাস্থা জ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি জেলা থেকে একটি গণঅনাস্থার চিঠি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কাছে লন্ডনে পাঠানো হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin