বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার আদালত স্থানান্তর করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের এক গেজেটে, মামলার স্থান পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের পুরাতন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। বেগম জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এখানেই অন্তরীণ অবস্থায় আছেন। বিএনপি গতকাল বিকেলে এই সিদ্ধান্ত জানার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। বিএনপি মহাসচিব তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলন করেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যোগাযোগ করেন যুক্তফ্রন্টের নেতা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে। অধ্যাপক চৌধুরীকে বলেন, ‘সরকার কারাগারেই বিচার বসানোর গেজেট করেছে। এই বিষয়ে আপনারা প্রতিবাদ করুন। সরকারের এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বলুন।’ জবাবে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘আমি তো ব্যাপারটা জানিনা। একটু জানি, আমার দলের লোকজনের সঙ্গে কথা বলি।’
এরপর বিএনপি মহাসচিব টেলিফোন করেন ড. কামাল হোসেনকে, ড. কামাল বলেন, ‘এটা তো সংবিধান লঙ্ঘন নয়। যেকোনো জায়গায় কোর্ট বসানো যায়।‘ মির্জা ফখরুলকে তিনি বলেন, ‘আপনারা তো জেলে কর্নেল তাহেরের বিচার করেছিলেন। আরও অনেকের জেলে বিচার হয়েছিল।’ মির্জা ফখরুলকে তিনি বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনেও তো বেগম জিয়া আর শেখ হাসিনার বিচার হয়েছিল সংসদ ভবনে। এটা তো কমন প্র্যাকটিস। বকশী বাজারে যে আদালত ছিল, সেটাও তো গেজেট করে হয়েছিল। আমাকে একটু গেজেটটা দেখতে হবে। ল পয়েন্ট দেখতে হবে। এভাবে তো বিবৃতি দেওয়া যায় না।‘
এরপর ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিবকে কিছু ছবক দেন। তিনি বলেন, ‘এই যে আমরা কথায় কথায় বিবৃতি দেই, এই বিবৃতি সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’ আর ব্যক্তির চিন্তা বাদ দিয়ে জনগণের কথা চিন্তা করুন।‘
ড. কামাল মনে করেন, ‘এই মামলা, হয়রানি ইত্যাদি সুশাসনের সমস্যা। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে এই সমস্যা এমনিতেই দূর হয়ে যাবে।’
যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরাম কেউই বেগম জিয়ার আদালত নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে নিয়ে আসা বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেননি। তাদের কর্মসূচির মধ্যেও বেগম জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি নেই। অথচ বিএনপির এই মুহূর্তের প্রধান দাবিই হলো, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে, বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। এই অবস্থান থেকে বেগম জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি বাদ দিয়ে বিএনপি কীভাবে যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে ঐক্য করবে তা নিয়ে এখন বিএনপির মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে।
বেগম জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের অবস্থান স্পষ্ট নয়। এরা দু’জনের কেউই আজ পর্যন্ত খালেদার মুক্তি দাবি করেনি।
বাংলা ইনসাইডার/