প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের ‘ভালো’ হতে বললেন মোশাররফ

প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের ‘ভালো’ এবং ‘নিরপেক্ষ’ হওয়ার কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তাদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের বলতে চাই, নির্বাচনের আগে আপনারা অতীতের কথা ভুলে গিয়ে নিরপেক্ষ হয়ে যান, ভালো হয়ে যান।’

শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

মোশাররফ বলেন, ‘এদেশে যারা অর্থ লুট, ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার ডাকাতি করেছে এই সব ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী। তাই প্রজাতন্ত্রের সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, যে-যে বিভাগে থাকেন না কেন? এই সব চিহ্নিত ব্যক্তিরা যাতে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে না পারে তার ব্যবস্থা আপনাদের গ্রহণ করতে হবে। যারা মালয়েশিয়া, কানাডায় সেকেন্ড হোম করেছে তাদের নাম আপনারা জানেন তাদের চিহ্নিত করুন।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জনগণের সামনে ইভিইম-মিবিয়েম কিছুই টিকবে না। খালেদা জিয়ার অপরাধ একটাই তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেন। আর তারেকের অপরাধ তিনি শহীদ জিয়াউর রহমানের ছেলে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এটায় তার অপরাধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ কথা একটা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় জনগণ জেলের তালা ভাঙবে এবং খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করবেন।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ও এরশাদ ছাড়া এদেশের সব মানুষ চায়। এই এরশাদ গৃহপালিত বিরোধী দল নয়, হিজড়া। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরুদ্ধে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বলব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের পথে আসুন, গণতন্ত্রের পথে যারা যাবে তাদের বাধা দেবেন না।’

সদ্য উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ভয়ভীতি করে ক্ষমতায় থাকার নীল নকশায় ওরা ভরসা করতে পারছে না বলে এখন ইভিএমের ওপর ভর করেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। আর অবৈধভাবে জোর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘নইলে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য যে সুনামি আসবে তাতে ইভিএমসহ সব কিছু ভেসে যাবে। দেশের জনগণ আজকে স্বৈরাচার থেকে মুক্ত হতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘সারা দেশে সরকারের পতনের আওয়াজ উঠেছে। জনগণ জেগে উঠেছে। সরকারের খুঁটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। কিন্তু এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা টের পাচ্ছেন না। আকাশে-বাতাসে, বৃক্ষে-বৃক্ষে পাতায়-পাতায় পতনের আওয়াজ ধ্বনিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জনকল্যাণে কাজ করেছেন, এখানে একটু সংশোধন আছে। তিনি জনগণের কল্যাণে নয়, আওয়ামী লীগের কল্যাণে কাজ করেন। তার জনগণকে প্রয়োজন নেই, তার প্রয়োজন ক্ষমতা। কারণ ক্ষমতায় থাকলে ব্যাংক লুট, রিজার্ভ, সোনা, কয়লা ও পাথর লুট করা যায়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। তাকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’

দীর্ঘদিন আত্মগোপানে থাকা ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলে এটা আমাদের জন্য বেদনার ও লজ্জ্বার। উনি (শেখ হাসিনা) পারফিউম মেখে সেজে গুজে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াবেন- এভাবে দেশ চলতে পারে না।’

সোহেল বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে বলব, জনগণের আওয়াজ কী আপনি শুনতে পাচ্ছেন না? এই আওয়াজ আপনার পতনের আওয়াজ। এই সরকারের নির্যাতনের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin