rongpur-jamat

নৌকা ডুবির সূচনা রংপুরে? নির্বাচনের সর্বশেষ মাঠ জরিপে এই তথ্যই উঠে এসেছে

রংপুরেই ‘নৌকা ডুবি’র সূচনা ঘটবে? ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই পিছিয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। নির্বাচনের সর্বশেষ মাঠ জরিপে এরকম তথ্যই উঠে এসেছে। রংপুর নির্বাচন এখন তাই ক্ষমতাসীন দলের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলেছেন, ‘সারা বাংলাদেশের চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে রংপুরে। এখানে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীও জনপ্রিয় কিন্তু অন্তঃকলহ প্রবল।’ ওই নেতা মনে করেন, ‘অন্তঃকলহেই পিছিয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ।’ অন্য একজন নেতা যিনি রংপুর ঘুরে এসেছেন জানালেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। কেন চায় তাঁরা নিজেরাও জানে না।’

আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা মনে করেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ ধরনের নির্বাচন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটা হওয়া উচিত না।’ তিনি ২০১৩র উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ওই সময়ে বিএনপি ৫ টি সিটিতে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতার ঘ্রাণ পেতে শুরু করেছিল।

এরপর বিএনপি কোন হিসেবে নির্বাচনে যায়নি, সেটা এক অদ্ভুত ধাঁধাঁ।’ বিএনপির অনেক নেতাই একান্ত আলাপে স্বীকার করে, ‘২০১৪র নির্বাচনে না যাওয়াটা ছিল বিএনপির এক মহাভুল।’

আওয়ামী লীগ, বিএনপি দুই দলই মনে করে, এবার ২০১৪র ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। আওয়ামী লীগ ২০১৪র মতো নির্বাচনের সুযোগ পাবে না, বিএনপিও মাঠ ছেড়ে যাবে না। তাই নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচনগুলো একেকটা অগ্নি পরীক্ষা।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা মনে করেন, ‘এই নির্বাচনে হারলে স্থানীয় নেতা কর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে যায়, শুধু স্থানীয় না সারা দেশেই নেতা কর্মীরা কম বেশি হোঁচট খায়।’ তিনি মনে করেন, ‘নির্বাচনে পরাজয় স্থানীয় সংগঠনের কোন্দল, ভুলবোঝাবুঝি আরও বাড়িয়ে দেয়। সন্দেহ, অবিশ্বাস বাড়ে।’

আওয়ামী লীগ হিসেব করেছিল, ঝন্টুর ইমেজ এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডে মানুষ তাঁর প্রতিই আস্থা রাখবে। এক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের সেলিনা হায়াৎ আইভিকে উদাহরণ হিসেবে দেখছিল। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সেলিনা হায়াৎ আইভি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ মানেই মনে করা হয় ওসমান পরিবারকে। তাছাড়া আইভির ব্যক্তিত্ব নারায়ণগঞ্জের মানুষ পছন্দ করে। সে তুলনায় ঝন্টু এখনো ম্রিয়মান।

দীর্ঘদিন জাতীয় পার্টি করার কারণে জাপার একটি বড় ভোট ঝন্টু গতবার পেয়েছিলেন। এবার সেটা তিনি পাবেন বলে মনে করেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। তবে এসব হতাশার চিত্রের পরও হাল ছাড়েনি আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মনে করেন, ‘নির্বাচনে অধিকাংশ ভোটার সিদ্ধান্ত নেয় শেষ মুহূর্তে। রংপুরে জনগণের ভোটে নৌকা প্রতীক জীয় হবে এই বিশ্বাস আছে।’ ওবায়দুল কাদেরের এই বিশ্বাস যদি সত্যি না হয় তাহলে রংপুর সিটি নির্বাচন সরকার বিরোধী আন্দোলনের পালে যে হাওয়া লাগবে তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই।

তাই কি হবে রংপুরে? আওয়ামী লীগের তৃতীয়বার ক্ষমতায় থাকার দ্বার উন্মোচিত হবে? বিএনপি-জাতীয় পার্টির ঐক্য রাজনীতিতে দেবে নতুন মেরুকরণ? নাকি বিএনপি মরুভূমিতে ফুল ফোটানোর মতো রংপুর জয় করবে? এই নির্বাচন নতুন বছরের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি অনেকটাই নির্ধারণ করবে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin