নির্বাচনে হারের দায় নিয়ে ব্যারিস্টার তাপসের পদত্যাগ

বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিবের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৮-২০১৯ সেশনের নির্বাচনে ভরাডুবির কারণেই তার এই সিদ্ধান্ত।

রবিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের কাছে এই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে মনোনীত প্রার্থীরা জয়যুক্ত না হওয়ায় ব্যর্থতার দায় নিজের মনে করে সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৮-২০১৯ সেশনের নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে ১০টি পদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবাদে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বিএনপি সমর্থিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের নীল প্যানেল। এই নির্বাচনে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের সাদা প্যানেল।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির মোট ১৪টি পদে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয় দুই দিন (২১ ও ২২ মার্চ)। ১৪টি পদে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩৩ জন প্রার্থী। আর ভোটার ছিলেন ৬ হাজার ১৫২ জন আইনজীবী। তাদের মধ্যে মোট ৪ হাজার ৮৬৫ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে বিএনপিপন্থীদের বিপুল জয়

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) ২০১৮-১৯ নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা। আর আওয়ামীপন্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৮ পদে জয়ী হয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল প্যানেল)। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের (সাদা প্যানেল) পেয়েছে ৬টি পদ।

দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা।

শুক্রবার সকালে নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির সমন্বয়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

সভাপতি পদে বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন এবং সম্পাদক পদে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছেন।

নীল প্যানেলের অন্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- সহ সভাপতি উম্মে কুলসুম বেগম রেখা ও সহ সম্পাদক শামীমা সুলতানা দিপ্তী। সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- আয়েশা আক্তার, মৌসুমি আক্তার, মুহাম্মদ হাসিবুর রহমান ও শেখ তাহসিন আলী।

সাদা প্যানেলের নির্বাচিতরা হলেন- সহ সভাপতি মো. অজিউল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম হিরু ও সহ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম। সদস্য পদে এ বি এম নুরে আলম উজ্জল,কুমার দেবুল দে ও মো.হাবিবুর রহমান হাবিব নির্বাচিত হন।

নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক এ ওয়াই মশিহুজ্জামান জানান, এবার ১৪টি পদের বিপরীতে ৩১ জন প্রার্থী হয়েছেন। পাঁচ হাজার ৮১ জন ভোটারের মধ্যে মোট ভোট দিয়েছেন ৩ হাজার ৯২৮ জন।

গত বছরের (২০১৭-১৮) নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ৮টি পদে আওয়ামীপন্থী প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিল। সভাপতি পদে সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু এবং সম্পাদক পদে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম বুদু নির্বাচিত হয়েছিলেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin