mirja_bnp

দানবের ভূমিকায় আওয়ামী ক্যাডাররা: ফখরুল

আওয়ামী কর্মীদের দানব আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য লাকসামের ৪টি ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া তাণ্ডব শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, শেষ মূহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালাতে দানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সোমবার মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. শাহ আলম তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ করতে গেলে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে সরকারদলীয় প্রার্থী শাহিনের অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী পুলিশের উপস্থিতিতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহ আলমের ছোট ভাই খোরশেদ আলমসহ ১৫ জন আহত হন।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলকারী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার বাসনায় সন্ত্রাস সৃষ্টিকেই এখন প্রধান অবলম্বন মনে করছে। পুলিশের উপস্থিতিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় এটি সুস্পষ্ট যে, দেশ এখন আইন-কানুনের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে না, বরং দেশ পরিচালিত হচ্ছে সন্ত্রাসী কায়দায়।

ভাঙচুরের মাধ্যমে শাহ আলমের ব্যবহৃত গাড়িটির ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়। আহতদের মধ্যে খোরশেদ আলম এর অবস্থা খুবই গুরুতর, তার ঘাড় ও মাথায় ‘রাম দা’ দিয়ে কোপানো হয়েছে। তিনি বর্তমানে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, লাকসামের ৪টি ইউনিয়নে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী গায়ের জোরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী করতে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আওয়ামী ক্যাডারদের লেলিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে চলছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ঝনঝনানি।

তিনি বলেন, প্রার্থী ও সমর্থকদের ভয় পাইয়ে দিতে এবং নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই বর্তমান শাসকগোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অতীতের স্থানীয় নির্বাচনগুলোর মতোই লাকসামের ৪টি ইউনিয়নেও এই ধরনের বর্বরোচিত, অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার অবতারণা করছে। বর্তমানে দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকার কারণে মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ভোট দেবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অনুমতি নিয়ে সরকার গড়িমসি করেছে: মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে ফখরুল
ঢাকা: রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের অনুমতি নিয়ে সরকার গড়িমসি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার বেলা ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি। এর পর হল রুম পরিদর্শন করেন তিনি। সমাপনী পর্বে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিবেন বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হয়, মুক্তিযোদ্ধা দল আজকের এই অনুষ্ঠানটি পালন করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে যখন অনুমতি চেয়েছে, তখন তাদের সঙ্গে অনেক রকম গড়িমসি করা হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের বেলা ২টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে রবিবার সকালেই মহানগর নাট্যমঞ্চে প্রবেশ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হলে মির্জা ফখরুলের হস্তক্ষেপে তার সমাধান হয়।

তিনি বলেন, আজকে মুক্তিযোদ্ধের সমাবেশের অনুমতি নিয়ে সরকার গড়িমসি করে । মাইক ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না, হল ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এখানে আমাদেরকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। আশা করব, ভবিষ্যতে মুক্তিযোদ্ধা দলের কোনো অনুষ্ঠানে সরকার বা সরকারের প্রশাসন কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না।

তিনি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে তারা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা যে চেতনা ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনার সঠিক ইতিহাস জনগণের সামনে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখতে সাফল্যের সঙ্গে কাছ করছে মুক্তিযোদ্ধা দল।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা দল সঠিক আদর্শ তুলে ধরার কাজ করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানোর কাজ করে চলেছে। স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করে চলেছে। তারা আমাদের কাছে নমস্য। কারণ তারা জীবন বাজি রেখে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আহ্বানে যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল সেই সংগঠন।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা দলে অনেক সেক্টর কমান্ডার রয়েছেন, অনেক বীর উত্তম, বীর প্রতীক, বীর বিক্রম রয়েছেন; যারা অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশকে স্বাধীন করেছেন।

তি‌নি আ‌রো ব‌লেন, আমরা মু‌ক্তিযু‌দ্ধের এই মা‌সে কাউ‌কে ছোট কর‌তে চাই না, খা‌টো কর‌তে চাই না, আমরা ডে‌বিলস‌কে তার শেয়ার দি‌তে চাই, এই আদর্শ আমরা শি‌খে‌ছি শহীদ প্রে‌সি‌ডেন্ট জিয়াউর রহমা‌নের কাছ থে‌কে। তারা আওয়ামী লীগ তারা মু‌ক্তিযুদ্ধ‌কে একটা সেলফ প্রোডা‌ক্টে প‌রিণত ক‌রে‌ছে, ধর্ম ব্যবসায়ীরা যেভা‌বে ধর্ম‌কে তা‌দের ব্যবসায় প‌রিণত ক‌রে আজ‌কে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা‌কে, মু‌ক্তিযুদ্ধ তা‌দের রাজ‌নৈ‌তিক একটা প্রোডা‌ক্টে প‌রিণত কর‌তে চাই‌ছে। তারা ভাগ ক‌রে ফে‌লে‌ছে দেশ‌কে, মু‌ক্তিযু‌দ্ধের প‌ক্ষের শ‌ক্তি, মু‌ক্তিযু‌দ্ধের বিপ‌ক্ষের শ‌ক্তি, তারা ব‌লে যে, তারাই না‌কি একমাত্র মু‌ক্তিযু‌দ্ধে প‌ক্ষের শ‌ক্তি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাৎ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin