তিন মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু

তিন মামলায় হাইকোর্টে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুর আড়াইটার পর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে এ শুনানি হয়।

এর আগে সোমবার (২১ মে) এই তিন মামলার মধ্যে দুটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ছিল। তবে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রস্তুতির জন্য সময় চান। পরে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চ জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।

খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

উল্লেখ্য, আদালতের অনুমতি নিয়ে ৩টি মামলায় রবিবার (২০ মে) হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

আবেদনের বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, ‘হত্যা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগের দুটি পৃথক অভিযোগে কুমিল্লায় দুটি মামলা এবং মানহানির অভিযোগে নড়াইলের এক মামলায় আমরা হাইকোর্টে জামিন আবেদনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেন। সে অনুযায়ী আমরা আবেদন দায়ের করেছি।’

এর আগে গত ১৬ মে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

তবে তার কারামুক্তির জন্য আরও ৬টি মামলায় জামিন নিতে হবে। পাশাপাশি ৪টি মামলায় হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহারের প্রয়োজন রয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা গত বৃহস্পতিবার ঢাকার পৃথক আাদালতে দুটি মানহানির মামলায় জামিনের আবেদন জানান। এ ছাড়া ৪টি মামলায় হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন জানান। আদালত শুধু নাইকো মামলায় হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহার করেছেন। বাকিগুলো পরে আদেশ দেয়া হবে উল্লেখ করে দিন ধার্য করেছেন।

এছাড়া কুমিল্লায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলার মধ্যে দুটি মামলায় জামিন আবেদন জানালে আদালত আগামী ৭ জুন শুনানির দিন ধার্য করেন। এছাড়া নড়াইলে মানহানির অভিযোগে করা মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। সেসব মামলায়ই এবার অনুমতি নিয়ে জামিনের জন্য সরাসরি হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।

মাদকের আসল গডফাদারদের ধরছেন না কেন: রিজভী

গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে এসব রাঘববোয়ালের নাম প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি পুলিশের কিছু উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে নানা চ্যানেলে মাদক এসে ঢুকছে বাংলাদেশে। এ চ্যানেলগুলোর উৎসমুখ বন্ধ করতে পারেনি কেন সরকার? মাদকের আসল গডফাদারদের ধরছেন না কেন? বলে প্রশ্ন করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ মন্তব্য করেন। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, গত রাতেও নেত্রকোনায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ছাত্রদলের সদস্য আমজাদ হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার নামে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানুষ হত্যা প্রাত্যহিক কাজে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের পরিপন্থী ও আইনের লঙ্ঘন। এ অনাচারের সরকারি প্রশাসনের মানবতার অধঃপতন আরও নিচের দিকে নামছে।

দেশের প্রচলিত আইনেই মাদক প্রতিরোধ সম্ভব উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আমরা মাদকবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে নই। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করুন, আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করুন এবং আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। কিন্তু তা না করে সারা দেশে বন্দুকের অপব্যবহারে মানুষ হত্যা কোনো সভ্যসমাজের কাম্য হতে পারে না।

মাদকবিরোধী অভিযানে গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত সাড়ে ৯ বছরে মাদকে ছেঁয়ে গেছে দেশ। যুবসমাজকে ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে মাদকের বিস্তার ঘটানো হয়েছে। এর পেছনে দায়ী ব্যক্তিরা হলেন সরকারদলীয় এমপি বদির মতো রাঘববোয়ালরা। যারা মাদক ব্যবসার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

রিজভী বলেন, গতরাতেও চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী, নেত্রকোনা, দিনাজপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ জনকে ক্রসফায়ার দেয়া হয়েছে। মাদক নির্মূলের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার যে হিড়িক চলছে, তাতে গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আছে। তা হল টার্গেট করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মেরে ফেলা।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার জনমনে আতঙ্ক তৈরি করতে চাইছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সুখবর আওয়ামী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে নেই। মানুষকে ভয় পাইয়ে দেয়ার নতুন প্রকল্প হল এই বন্দুকযুদ্ধ।

তিনি বলেন, রমজান মাসে কর্দমাক্ত খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও আইনশৃঙ্খলার করুণ পরিণতিতে দেশের বেহাল অবস্থা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই নতুন এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin