tareq_rahman

তারেক ‘নিখোঁজ’, বিভ্রান্ত বিএনপি

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিএনপির কেউ দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। লন্ডনে তারেক জিয়া তিনটি ফোন নম্বর ব্যবহার করেন। বর্তমানে তিনটি ফোনই বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। দলের কোনো নেতাকর্মী বার বার ফোন করেও তাঁকে পাচ্ছেন না। পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তারেক জিয়া।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ দলের সিনিয়র নেতারা কেউ তারেক জিয়াকে ফোন করে পাচ্ছেন না। শামীম ইস্কান্দারসহ জিয়া পরিবারের সদস্যরাও তারেক জিয়ার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না। আবার লন্ডন থেকে তারেক জিয়াও কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছেন না। গত দুদিন ধরে তারেক জিয়ার এমন ‘নিখোঁজ’ অবস্থা।

দলের একমাত্র কর্ণধার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় দলের নীতি নির্ধারণ বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তিন সিটি নির্বাচন নিয়েও আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিএনপি।

একাধিক সূত্রে বলছে, জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে ব্যর্থ হয়েই যোগাযোগবিচ্ছিন্ন আছেন তারেক। কারণ, জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্রিটেনে থাকা জামাত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আলোচনার কথা ছিল তারেক জিয়ার।

একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামাত নেতা গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসিমসহ যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের সঙ্গে জামাত-বিএনপি সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার কথা ছিল তারেকের। কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, রাজশাহীতে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কাছ থেকে বড় অংকের অর্থও নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

কিন্তু রাজশাহী জামাতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের কোনো উন্নয়ন হয়নি। গত ১৮ দিনের নির্বাচনী প্রচারণায় রাজশাহী জামাতের কোনো সমর্থন পায়নি বিএনপির মেয়র প্রার্থী বুলবুল। উল্টো ১৪ টি কাউন্সিল আসনে প্রার্থী দিয়ে আলাদা প্রচারণা চালাচ্ছে জামাত। এছাড়া ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে মেয়র প্রার্থী বুলবুলসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে কটাক্ষ করে বেড়াচ্ছেন রাজশাহী জামাতের নেতারা।

বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতাদের মতে, সিটি নির্বাচন নিয়ে তারেক জিয়ার পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার কারণেই নিজেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন তারেক জিয়া। কিন্তু এই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থার কারণে আরও সমস্যা দেখা দিয়েছে।

গত কদিন ধরেই তিন সিটিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দের বক্তব্য দেখা যাচ্ছে বিক্ষিপ্ত। কোনো নেতা বলছেন নির্বাচনে কারচুপি হলে নির্বাচন বর্জন করবেন, আরেকটি পক্ষ বলছে শেষ পর্যন্ত দেখবেন, কেউ বলছেন থানা, কেন্দ্র ঘেরাও করা হবে, আবার কেউ বলছেন নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সরকারের মুখোশ উন্মোচন করবেন। বিএনপি নেতাদের এমন স্ববিরোধী নানা বক্তব্য দলের মধ্যেকার সিদ্ধান্তহীনতার প্রতিফলন মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিএনপির মধ্যে এখন শুধু বিভ্রান্তির বসবাস। কাল তিন সিটির নির্বাচনে এমন বিভ্রান্ত দল শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin