tareq_rahman

তারেকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকা নিয়ে ধূম্রজাল

২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডিত হন। আদালতের রায়ের পরপরই তাকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৫ মাস তিনি কারান্তরীণ ছিলেন। কারাগারে যাওয়ার আগেই তিনি গুলশানে তার বাসভবনে তার পুত্র তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। আবেগঘন ওই আলাপচারিতায় তিনি বিএনপির দায়িত্বভার বড় পুত্র তারেক জিয়ার ওপর ন্যাস্ত করেন। এর পরপরই তারেক জিয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়ে যান।

তারেক জিয়া দলের সর্বশেষ কাউন্সিলে ছিলেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। বেগম খালেদা জিয়া যেহেতু অনুপস্থিত ছিলেন, কারান্তরীণ ছিলেন এজন্য দল পরিচালনার জন্য পুত্রকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৬ মাসের দণ্ড স্থগিত করার সুবাদে এখন তিনি মুক্ত জীবন যাপন করছেন। এখন তিনি ‘ফিরোজায়’ অবস্থান করছেন।

বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হয়েছিল যে তারেক জিয়াই এখন বিএনপির মূল নেতা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার নির্দেশনা অনুযায়ীই দল চলবে। এমনকি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সংবাদ সম্মেলনে তারেক জিয়ার নেতৃত্বের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিলেন। এখন বেগম খালেদা জিয়া ফিরে এসেছেন এবং তিনি দলের চেয়ারম্যান। তাহলে তারেক জিয়া কি এখনও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছেন?

বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য রাখা হয়নি। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসী তারেক জিয়া স্বাভাবিকভাবেই থাকবেন না। কারণ ‘ম্যাডাম’ এখন মুক্ত। যেহেতু তিনি দলের চেয়ারপারসন, কাজেই তিনি যখন কার্যক্রমের মধ্যে থাকবেন, তখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ আপনাআপনিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে এ নিয়ে বিএনপিতে ভিন্ন মতও আছে।

কেউ কেউ বলছেন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই তিনি সেটা পেয়েছেন শর্তসাপেক্ষে। এখন পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিক নাগরিক নন। তাছাড়া তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। কাজেই তিনি দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা বা এ ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ আছে কিনা, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।

ফলে এখন বিএনপির নেতৃত্বের চাবি কার হাতে তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিএনপির একাধিক নেতাই মনে করেন যে, তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানানো ছিল একটি অপররিনামদর্শী সিদ্ধান্ত। কারণ দলের চেয়ারপারসন যদি গ্রেপ্তারও হন, তবেও তিনি চেয়ারপারসনের পদ থেকে সরে যান না। কারণ বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দন্ডিত হলেও চেয়ারপারসন দলের পদে বহাল থাকতে পারেন।

সেই বিবেচনা থেকেই বেগম জিয়া দলের চেয়ারপারসন ছিলেন এবং তারই চেয়ারপারসন থাকা উচিৎ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলে কোনো পদ বিএনপির গঠনতন্ত্রে নেই। কিন্তু বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। কিন্তু বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, বেগম জিয়া চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কি করবেন না নাকি তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে দল চালাবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে একমাত্র চেয়ারম্যানকেই। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চূড়ান্ত ক্ষমতা চেয়ারম্যানের।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin