kha_tare_job

তারেকের কৌশলী চালে পরাস্ত শেখ হাসিনার অপকৌশল

বিএনপির কৌশলের কাছে কুপোকাত শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনকে সামনে শেখ হাসিনা একঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিলেন । এক. খালেদা জিয়াকে দুর্নীতিবাজ জনগণের সামনে খালেদা জিয়ার ইমেজ প্রতিষ্ঠা করা। দুই.খালেদা জিয়া ইস্যুতে বিএনপিকে অপরিকল্পিতভাবে রাজপথে নামিয়ে দিয়ে আগামী নির্বাচনে ফায়দা হাসিল করা। তবে এবার হিতে বিপরীত হয়েছে। সারাদেশে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের কাছে খালেদা জিয়া ছিলেন ‘ম্যাডাম’। তাঁকে বিচারের নামে অবিচারের দিকে ঠেলে দেয়ায় সারাদেশে প্রবাসে লাখো কোটি মানুষের কাছে খালেদা জিয়া এখন ‘মা’ ।

খালেদা জিয়ার দুর্নীতি বের করতে গিয়ে বরং এখন বেরিয়ে আসছে শেখ হাসিনা, তার ছেলে জয়, শেখ পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লুটেরা চক্রের ব্যাংক ডাকাতির খবর। জানা যাচ্ছে, আওয়ামী লুটেরা চক্র লক্ষ লক্ষ্ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। দেশের সরকারি বেসরকারি প্রতিটি ব্যাংক আওয়ামী লুটেরা চক্রের লুটপাটের শিকার। প্রকাশ হয়ে পড়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ হাসিনা কিভাবে তার নিজের নামে থাকা ১৫টি টি দুর্নীতির মামলা দলীয় বিচারপতিদের দিয়ে দিয়ে গায়েব করে দিয়েছিলেন।

অনেকেই মনে করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে না নিলে আওয়ামী লুটেরা চক্রের ব্যাংক ডাকাতির খবর হয়তো এই মুহূর্তে সারাদেশে এতো তুমুলভাবে আলোচনায় আসতোনা। শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ছিল খালেদা জিয়া ইস্যু ব্যবহার করে বিএনপিকে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তায় নামিয়ে এনে নিজেরা নাশকতা করে দায় চাপাবে বিএনপির ওপর। এরপর একটি বিশেষ অঞ্চলের র‌্যাব-পুলিশ বিএনপির পেছনে লেলিয়ে দিয়ে হামলা মামলা গুম খুন করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই বিএনপিকে মাঠ ছাড়া করবে।

কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী পরিকল্পনায় শেখ হাসিনার অপকৌশল আপাতত নস্যাৎ হয়ে যায়। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন তারেক রহমান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারী) বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, উপদেষ্টা, ভাইস চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম মহাসচিব বৃন্দের সভায় লন্ডন থেকে টেলিকনফারেন্সে তারেক রহমান দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘সরকারের পাতা ফাঁদে পা দেয়া যাবেনা’। তিনি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেন।

বিএনপির এই কৌশলে দৃশ্যতঃ পরাস্ত হয় শেখ হাসিনার অপকৌশল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি সরকারের পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ বেছে নেয়ায় নির্বাচনের বছরে এরইমধ্যে কয়েকটি বড়ধরণের রাজনৈতিক সুফল পেয়েছে বিএনপি। যেমন এরইমধ্যে প্রমান হয়ে গেছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তথাকথিত দুর্নীতির মামলাটি ছিল মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। নিম্ন আদালতের বিচারক আখতারুজ্জামান ১০ দিনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় লেখার দাবি করলেও মামলার রায় ঘোষণার পর দশ দিন পার হয়ে গেলেও রায়ের সার্টিফায়েড কপি দিতে না পারায় জনগণের কাছে এখন এটি প্রমাণিত সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে এ মামলার আসল উদ্দেশ্য খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা। এটিও প্রমাণিত হয়েছে, এ রায় বিচারক আখতারুজ্জামানের নয়. শেখ হাসিনার ইচ্ছে পূরণে আদালতকে ব্যবহার করে শেখানো বুলি আওড়িয়েছেন আখতারুজ্জামান।

ফলে খালেদা জিয়ার প্রতি সরকারের বিশেষ করে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় গণতন্ত্রকামী জনগণের সমর্থন এবং সহমর্মিতা কারাবন্ধী খালেদা জিয়ার প্রতি। জনগণের কাছে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। অপরদিকে শেখ হাসিনা এবং তার পরামর্শদাতাদের ধারণা ছিল খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করলে বিএনপিতে নেতৃত্ব সঙ্কট দেখা দেবে। এ ধারণাও ইতোমধ্যে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বরং বিনাপ্রশ্নে দলের সর্বস্তরে তারেক রহমানের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা হচ্ছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো নেতা অবস্থান নিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা বরং ওই নেতাকে প্রত্যাখ্যান করবে। বরং হয়েছে এর উল্টোটা। আগে বিএনপি বিরোধীরা দলে খালেদা পন্থী কিংবা তারেক পন্থী বলে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলেও এখন দেখা যায় এসবই ছিল অপপ্রচার। বরং দলের সকল নেতা এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে এককাতারে – এক বলয়ে।

কারণ দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তো বটেই দেশের জনগণের মাঝেও এটিও প্রমাণিত, তারেক রহমান বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অপপ্রচারের শিকার। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ডজন ডজন মামলা দিয়ে রেখেছেন শেখ হাসিনা। তারেক রহমানকে জনগণের কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য আদালতকে ব্যবহার করে দেশের গণমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য প্রচারেও বাধা সৃষ্টি করে রেখেছেন। এতে বরং তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে।

ভারত, পাকিস্তান, ভারতসহ এই অঞ্চলের রাজনৈতিক বাস্তবতা হলো, ক্ষমতাসীনরা সব সময়ই প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য হামলা কিংবা মিথ্যা মামলার পথ বেছে নেয়। এ ধরণের মামলা শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের বিরুদ্ধেও হয়েছিল। এমনকি একটি অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ১৯৬০ সালে শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইন ১৯৪৭ বিধির ৫ (২) ধারায় শাস্তি হয়েছিল। মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলেছেন, সরকারের অপকৌশল জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই নিজের স্বার্থেই সরকার অচিরেই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবে। কারাবন্দী হওয়ার আগে খালেদা জিয়াও দলের নেতাকর্মীদের কৌশলী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ আগামী নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার নানারকমের অপকৌশলের আশ্রয় নেবে। ডেইলিবিডিটাইমস

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin