tarek_rahman

তারেককে সরানোর পথ খুঁজছে বিএনপি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা রায়ের পর নাটকীয় মেরুকরণ হচ্ছে বিএনপিতে। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই মামলায় যদি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা তারেক জিয়াকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেবেন।

কারান্তরীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্বে থাকবেন, তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। নতুন নেতৃত্ব জামাতকে বাদ দিয়ে যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের সঙ্গে নির্বাচনী মোর্চা গঠন করবে। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এরকম চিন্তাভাবনার কথা স্বীকার করেছেন।

একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক জিয়ার দণ্ড চান। তাঁরা তারেক জিয়াকে সরিয়ে দেয়ার পথ খুঁজছেন। ঐ মামলার রায়ে তারেক জিয়া দণ্ডিত হলে, বিএনপি নেতারা সেই পথ খুঁজে পাবেন।

বিএনপি নেতারাই বলছেন, তারেকের অত্যাচারে তাঁরা অতিষ্ট। তারেক জিয়া এখনও তাঁর হাওয়া ভবনের সঙ্গী সাথী অপুদের নিয়েই আছেন। একজন বিএনপির সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘যাদের কারণে বিএনপির আজকে এই পরিণতি, তারেক সাহেব সেই তাদের পরামর্শেই চলছেন। উনি একটুও বদলাননি।’

তাঁর মতে ‘আমরা আশা করেছিলাম তিনি মায়ের গ্রেপ্তারের পর সিনিয়র নেতাদের কথা শুনবেন, তা হয়নি। বরং আমরা তাকে পরামর্শ দিতে গিয়ে অপমানিত হয়েছি। বিএনপির একজন আইনজীবী বললেন,‘ তারেক জিয়া তার মায়ের মুক্তি চান কিনা সে নিয়ে আমাদের গুরুতর সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বেগম জিয়ার মামলার তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মীর হেলালসহ তিনজন জুনিয়র আইনজীবীকে। আইন পেশায় যাদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা কোনটাই নাই।’

ঐ আইনজীবী বলেন,‘ দলের সিনিয়র আইনজীবীদের তারেক নির্দেশ দিয়েছেন যে ঐ তিনজনের নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম জিয়ার মামলাগুলোকে পরিচালিত করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য একজন সদস্য বলেছেন,‘লন্ডনে বসে তারেক জিয়া মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন। কে যোগ্য, কে অযোগ্য, কে জনপ্রিয় এসব বিবেচনা না করে, যার কাছ থেকে বেশি অর্থ পাচ্ছেন, তাকেই মনোনয়ন দিচ্ছেন।’

ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়েও বিএনপির সিনিয়র নেতারা ক্ষুদ্ধ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির নেতারা সুযোগ খুঁজছেন। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার মামলার রায় তাদের জন্য সেই সুযোগ। বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘রায় দিতে দেরি হচ্ছে কেন?’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিএনপি তার গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা বিলুপ্ত করে যে সংশোধনী কমিশনে দিয়েছে, তা কমিশন এখনও গ্রহণ করেনি। একটি সূত্র বলছে, ২১ আগস্ট রায়ের পর নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তখনই বিএনপিতে দ্রুত মেরুকরণ ঘটবে। ঐ সূত্রমতে, ঐ রায়ের জন্যই বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিএনপির ঐক্য থমকে আছে।

যুক্তফ্রন্ট এবং ড. কামাল হোসেন দুজনই তারেক জিয়ার ব্যাপারে নিজেদের অস্বস্তির কথা বিএনপির নেতাদের বলেছেন। তারেকমুক্ত বিএনপির সঙ্গেই তাঁরা ঐক্যে আগ্রহী। এমন একটি বিএনপির ব্যাপারে আগ্রহ আছে ভারতেরও।

বাংলা ইনসাইডার/

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin