tabit_salim

তাবিথ বিএনপির, সেলিম জামাতের

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনে ২০ দলীয় একক প্রার্থীর বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি। এরই মধ্যে বিএনপি তাবিথ আউয়ালকে মনোনয়ন দিয়েছে। তবে এতে বিএনপির নেতৃত্বধীন ২০ দলের সংকট আরও বেড়েছে। এখন জামাতের পক্ষ থেকে সেলিম উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে নির্বাচন করতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ২০ দলের অন্যতম শরিক জামাত শুরু থেকেই ক্ষুব্ধ ছিল। শরিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই বিএনপি ঢাকা উত্তরের জন্য তাবিথকে মনোনীত করায় এই ক্ষোভ আরও বেড়েছে বলেই একাধিক সূত্রে জানা গেছে। জামাতের পক্ষ থেকে সেলিম উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিয়ে নির্বাচন করতে পারেন। তাবিথও যেমন মনোনয়ন কিনেছিলেন, তেমনি সেলিম উদ্দিনও।

জামাত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঢাকা উত্তর নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জামাত সমঝোতা ছাড়াই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি মনোনয়নের জন্য তাঁদের সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। ২০ দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সেলিম উদ্দিনও মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। তবে এখন তাবিথকে হঠাৎ করেই প্রার্থীতা ঘোষণায় তারা ক্ষুব্ধ।

শরিক জামাতের ক্ষুব্ধ মনোভাবের বিষয়টি বিএনপিরও অজানা নয়। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এর আগেই জামাতের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে কোনো সুরাহা না হয়নি। এখন মনোনয়ন ঘোষণার পরও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সময় আছে, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় পর্যন্ত মনোনয়ন পরিবর্তনের সুযোগ আছে।

তবে জামাত এমন ছেলে ভোলানো কথা মানতে নারাজ বলেই জানিয়েছে একাধিক সূত্র। আলোচনা ছাড়াই মনোনয়ন দিয়ে এখন মনোনয়ন পরিবর্তনের বুলির ওপর তারা আস্থা রাখবে কীভাবে? বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে ২০ দলীয় জোটের ভবিষ্যত।

কারণ জামাতের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে জামাতের প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবেই নির্বাচন করবে তা নিশ্চিত। কারণ এখনো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে প্রার্থী সেলিম। তাই মনোনয়ন পরিবর্তন বা জামাতের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না হলে এবং জামাত নির্বাচনে গেলে ২০ দলীয় জোটের ভাঙ্গনের বিষয়টি জাতির কাছে আর লুকোছাপা থাকবে না।

‘তারেকের বিএনপি নয়, জিয়ার বিএনপি চাই’

বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবীরা বললেন ‘আমরা তারেকের বিএনপি চাই না, জিয়ার বিএনপি চাই। তারা বলেন ‘এখন তারেককে বাদ না দিলে বিএনপির কোন ভবিষ্যত নয়। সোমবার সন্ধায় বেগম জিয়ার সাথে বৈঠকে এরকম মন্তব্য করেন বিএনপি সমর্থক বলে পরিচিত বুদ্ধিজীবীরা। ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের আগে বুদ্ধিজীবীরা প্রায় দেড়ঘন্টা বেগম জিয়ার সাথে বৈঠক করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডা: জাফর উল্লাহ চৌধুরী, ড: মাহাবুব উল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান অধ্যাপক সদরুল আমিন, আবদুল হাই সিদ্দিকী সহ কয়েকজন।

বিএনপি সূত্র বলছে, গত মেয়র নির্বাচনের আদলে একটি নাগরিক কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে বেগম জিয়া ঐ বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে বেগম জিয়া তেমন কোন কথা বলেননি, কথা বলেছেন বুদ্ধিজীবীরা।

এর মধ্যে ডা: জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন ‘আপনাকে গুলশানে ঘরে বসে থাকলে চলবে না, ঢাকার বাইরে যেতে হবে। জনগনের কাছে যেতে হবে।’ তিনি বলেন ‘বিএনপিকে আপতত: তারেককে বাদ দিতে হবে।’ এর সাথে সুর মিলিয়ে ডা: মাহাবুব উল্লাহ বলেন ‘তারেকের বিএনপি হচ্ছে দলটা। এখান থেকে আপনাকেই বাঁচাতে হবে।’

অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন বলেন ‘বিএনপি কি চায় সে সম্পর্কে জনগণের স্পষ্ট ধারনা নেই।’ সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন ‘বিএনপি লক্ষ্যহীন। লক্ষ স্থির করে হবে।’

দেড় ঘন্টার বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

‘মেধা, প্রজ্ঞা ও কৌশলে আপনি শেখ হাসিনার কাছাকাছি নেই’

বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বেগম খালেদা জিয়াকে বলেছেন, ‘আপনি শেখ হাসিনার থেকে অনেক পিছিয়ে পড়েছেন। মেধায়, প্রজ্ঞায় এবং কৌশলে কোনটাতেই আপনি শেখ হাসিনার কাছাকাছি নেই। কেন এটা হলো তা খুঁজতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক বলেন, ‘আপনি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছেন।’

সোমবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় ডা. জাফরুল্লাহ একথা বলেন। বেগম জিয়ার আমন্ত্রণে কয়েকজন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী এই মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।

ডা. জাফরুল্লাহ অভিযোগ করেন, বিএনপি ক্রমশ: জনবিচ্ছিন্ন একটি দলে পরিণত হচ্ছে। কমিটিগুলো অকার্যকর। তিনি বলেন, ‘তৃনমূল থেকে সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে।’ ডা. জাফরুল্লাহ মন্তব্য করেন, ‘এই বিএনপি দিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে পারবেন না। শেখ হাসিনা আপনাকে খুব কৌশলে বেধে রাখছে।’ আপনাকে সারা দেশে যেতে হবে, কিন্তু কীভাবে যাবেন? আপনাকে তো কোর্টেই ব্যস্ত রেখেছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin