ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, আজ কিন্তু সত্যিকারে সমস্ত বাংলাদেশি তরুণদের বিজয় হলো।
তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি বড় দল ২০ দলীয় জোট। তারা যে আমাকে মনোনীত করে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে তা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। কেননা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অনেক আগেই বলেছেন যে, আগামীর বাংলাদেশ হবে তরুণদের বাংলাদেশ। সেই ধারাবহিকতায় দেখতে পাচ্ছি উনি (খালেদা) উনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন।
সোমবার রাতে দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার পর ঢাকা উত্তরবাসীদের প্রতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
তাবিথ বলেন, আগামীতেও আমরা দেখব অনেক তরুণ এই রাজনৈতিক দলের মাধ্যমেই দেশসেবাতে যোগদান দিতে পারেন। এই মুহূর্তে এর বেশি বলার নাই। কারণ আপনারা সকলেই জানেন যে, আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির দিকে যাচ্ছি।
এদিকে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমি আমার কমেন্ট রিজার্ভ রাখতে চাচ্ছি। কারণ নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে একটি মেটার সাবজুডিশন আছে। আমি নিজে এখনও বিধিমালা মোতাবেক অফিসিয়াল প্রার্থী হতে পারিনি। আর এরকম প্রচার করে আমিও চাচ্ছি না নির্বাচন বিধিমালা ভঙ্গ করতে। তাই দয়া করে একটু অপেক্ষা করুন আমি শিগগিরই আপনাদের মাঝে উত্তর নিয়ে আসব।
তরুণ এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম এনে আবার যখন জমা দেব, ঠিক তারপর থেকে আমি প্রার্থী হিসেবে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি এবং প্রচার শুরু করতে যাব।
দলের অন্য প্রার্থীদের ধন্যবাদ ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তাবিথ বলেন, আমি আশা করি উনাদের দোয়া ও সহযোগিতায় ভালো কিছু উপহার দিতে পারব।
এর আগে, সোমবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়ন বোর্ডের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। মনোনয়ন বোর্ডে সভাপতিত্ব করেন খালেদা জিয়া। পদাধিকার বলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বোর্ডে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রাত সাড়ে ৮টায় মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ প্রার্থী গুলশান কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। তারা হলেন- দলের বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাবেক সাংসদ মেজর (অব) আখতারুজ্জামান, সহ-প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাউয়ুমের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু।
ঢাকা উত্তরের নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ঘোষিত নির্বাচনী তফসিলের স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করেছেন রাজধানীর উত্তরের দুই ভোটার। পরে রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে আদেশের জন্য আগামীকাল (বুধবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
রাজধানী উত্তরের বেড়াইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও ভাটারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের পক্ষে আজ (মঙ্গলবার) হাইকোর্টে এ রিট দুটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে রিট পৃথক দুটি দায়ের করা হয়েছে। রিটের ওপর আজ (মঙ্গলবার) শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে আগামীকাল (বুধবার) আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আহসান হাবিব ভূঁইয়া আরও বলেন, মেয়র পদে নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকার প্রকাশ করা হয়নি। ভোটার তালিকা প্রণয়নের আগেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। এ বিষয়টিকে যুক্তি হিসেবে দেখিয়ে রিট আবেদন দায়ের করেছি।
উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক মারা যাওয়ায় উপ-নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।