bnp-flag

ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনবিএনপির প্রস্তুতি শুরু

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছে বিএনপি। প্রার্থিতা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচনের কর্মপন্থা ঠিক করতে ৩৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জানা গেছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তৃণমূলের দাবি বিবেচনায় নিয়ে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনের চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আগ্রহী। এর কারণগুলো হচ্ছে- এক. জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজধানীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের গ্রহণযোগ্যতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাড়াতে চায় ক্ষমতাসীনেরা।

দুই. স্বল্পমেয়াদি মেয়র পদের এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী পরাজিত হলেও জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নির্দলীয় সরকারের দাবি দুর্বল হবে। তিন. সিটি নির্বাচনের কারণে সরকারের মেয়াদের শেষ বছরের শুরুতে আন্দোলন তীব্র করতে পারবে না বিএনপি।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানিয়েছেন, উপনির্বাচন হলেও রাজধানীতে আসন্ন এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ও বার্তাবহ। রংপুর সিটি নির্বাচনের ফলের সাথে অন্য সিটিগুলোকে মেলালে হবে না। নির্বাচনের আলোচনায় থাকা সিটিগুলোতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থীরাই জয়লাভ করবে।

এসব নির্বাচনে জয়লাভ করলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায় আরো সহজ হতে পারে। সে জন্য স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রে অবস্থিত ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, প্রার্থী বাছাইসহ নির্বাচনের কর্মপন্থা ঠিক করতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ওয়ার্ডভিত্তিক ৩৬টি কমিটি গঠন করেছে। নির্বাচন নিয়ে জনমত যাচাই করতে নগরব্যাপী জরিপ করবে এই কমিটি। মেয়র পদের জন্য আলোচনায় থাকা প্রার্থীদের মধ্যে কে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য তা জরিপ করে একটি রিপোর্ট দলের হাইকমান্ডের কাছে পেশ করা হবে।

নির্বাচনে ওয়ার্ডপর্যায়ে কোন নেতাকে কী দায়িত্ব দেয়া উচিত, পোলিং এজেন্টদের একটি তালিকা এবং নতুন করে যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর পদে বিএনপির কাকে সমর্থন করা উচিত এসব বিষয়ে মাঠ জরিপের রিপোর্ট দ্রুত জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কমিটিকে। এ ছাড়া আলোচনায় থাকা মেয়র ও কাউন্সিলর পদের সব প্রার্থীর মামলা এবং ঋণখেলাপির পরিসংখ্যান, দুর্নীতির অভিযোগসহ প্রতিটি বিষয় লিপিবদ্ধ করা হবে ওই রিপোর্টে।

কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান জানান, নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি যাতে না থাকে সে জন্য সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে ওয়ার্ডভিত্তিক ৩৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ দিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দলের ইতিবাচক অবস্থান দেখে উত্তর সিটিতে মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীরা দলীয় টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রাথমিক কাজও শুরু করেছেন। দলের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি নির্বাচনের ইশতিহার তৈরির কাজও চলছে।

এ দিকে উত্তর সিটিতে মেয়র পদের জন্য বিএনপিতে আলোচনায় রয়েছেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ুম, বিএনপির সহপ্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ এবং গত সিটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল। ২০ দলীয় জোটের শরিক বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থও আছেন আলোচনায়।

ঢাকা সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো নির্বাচনের জন্য বিএনপির প্রস্তুতি আছে। আর উত্তর সিটির নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ জন্য দলের প্রস্তুতি আছে। তফসিল ঘোষণার পর দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

জানা গেছে, জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin