bnp-flag

টার্গেট নতুন প্রজন্ম >> প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কাছে টানার চেষ্টায় বিএনপি

নতুন প্রজন্মকে নিয়ে ভাবনায় বিএনপি। একবিংশ শতাব্দীর জ্ঞানভিত্তিক ও প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ নেতৃত্বকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ৪৩ লাখ নতুন ভোটারকে কাছে টানার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বিএনপি। সেজন্য প্রযুক্তিনির্ভর ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে সামনে রেখেই তৈরি করা হয়েছে দলের গঠনতন্ত্র।

নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছেন ভিশন-২০৩০। সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি ও তরুণদের নিয়েই দলের চিন্তাধারা তুলে ধরা হয়েছে। তরুণদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে বেশকিছু সম্পাদকীয় পদও সৃষ্টি করা হয়েছে। বিএনপি-প্রধান বেগম জিয়ার বক্তৃতা-বিবৃতিতেও এখন সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে তরুণ নেতৃত্ব।

জানা যায়, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের কথা মাথায় রেখেই বিএনপির নতুন নির্বাহী কমিটিতে একঝাঁক তরুণ নেতাকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটিতেও এবার ঠাঁই পেয়েছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব।

দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানও তরুণ। তার চিন্তাধারাও প্রতিফলিত হচ্ছে বিএনপির সর্বস্তরে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কমিটিগুলোতেও তরুণ নেতৃত্বের ছাপ পাওয়া যাচ্ছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতৃত্বেও তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বেগম জিয়াও দলের তরুণ নেতা-নেত্রীদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেন।

অবশ্য বিএনপি বলছে, পুরনো নেতাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই তরুণদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হচ্ছে। বিএনপি-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ৮০ ভাগ ভোটার তরুণ। সুতরাং তরুণদের বিরাট একটি অংশ ভবিষ্যতে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবে। তাদের ভোট খুবই মূল্যবান। তাদেরই আশা-আকাঙ্ক্ষা যে দল পূরণ করতে পারবে, সে দলকেই তারা ভোট দেবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তরুণদের ঘিরেই। সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্বে তারাই আমাদের ভরসা। আজকের এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সারা বিশ্বে যে উন্নয়নের জোয়ার সেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে তরুণরা।

সুযোগ-সুবিধা করে দিলে তারাই বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ দিয়েছেন। সেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন নতুন প্রজন্মকে। তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, তাদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা, তাদের তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক তরুণসমাজ আমরা দেখতে চাই। তাদের জন্য সেই পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টির দায়িত্ব আমাদের। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর।

’ বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক তরুণ নেতা আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বব্যাপী তরুণদের জয়জয়কার। এ ক্ষেত্রে বিএনপিও তরুণদের সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে নির্বাহী কমিটি এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্বেও তরুণদের দেখা যাচ্ছে। প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানভিত্তিক লড়াইয়ে পুরনোদের পেছনে ফেলে তরুণরাই এগিয়ে।

’ নতুন প্রজন্মকে সামনে রেখেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার ভিশনে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ভিশনে বলা হয়, সেবা খাতনির্ভর উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে সংগতি রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাতে রূপান্তর করা হবে। আউটসোর্সিং ও সফটওয়্যার খাতকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হবে।

তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে বিদেশ থেকে অর্জিত অর্থ দেশে আনয়নের ক্ষেত্রে সকল প্রকার অযৌক্তিক বাধা দূর করা হবে। খালেদা জিয়ার ভিশনে ভিওআইপি উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ইন্টারনেটের ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা হবে। মোবাইল কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে সারা দেশে বিশেষ করে মফস্বলে উচ্চগতির ফোর-জি কভারেজ নিশ্চিত করা হবে। উচ্চগতির ইন্টারনেট কভারেজ নিশ্চিত করা হবে। সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার শিল্পে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেওয়া হবে।

ইন্টারনেট ব্যবহারের মূল উপাদানগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে দেশে উৎপাদন উৎসাহিত করা হবে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, হাইটেক পার্ক, এডুকেশন পার্ক, কম্পিউটার ভিলেজ, আইটি ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠা করে জ্ঞান বিকাশ ও দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো হবে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে কম্পিউটার সমর্থিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, প্রত্যেক জেলায় একটি করে ‘স্মার্ট স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এসব স্কুল অন্যান্য স্কুলের জন্য মডেল প্রযুক্তি প্রদর্শকের কাজ করবে। প্রতি জেলায় একটি করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে। ২০২০ সালের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ প্রাথমিক স্তরে প্রশিক্ষিত শিক্ষক, হার্ডওয়্যার, ল্যাবরেটরিসহ সব দিক থেকে উন্নততর আইটি শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

বিএনপি জনগণের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে বলে তথ্যপ্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমবিষয়ক সব আইনের অগণতান্ত্রিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক ধারাসমূহ সংশোধন করবে। বিএনপির তরুণ নেতারা বলছেন, বিএনপির হাইকমান্ড ভিশন সামনে রেখে এগোলেই আগামীতে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধিশালী দেশে পরিণত হবে। কারণ, বিশ্বব্যাপী এখন তরুণদের জয়জয়কার।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin