এখনই জামাতকে ছাড়তে চায় না বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এরকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আবার জামাতের নেতৃবৃন্দের সংগে কথা বলার জন্য বেগম জিয়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্দেশ দিয়েছেন। বেগম জিয়া বলেছেন ‘জামাত চলে গেলে সরকার আমাদের ছাড়াই নির্বাচন করে ফেলবে।’
শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠক গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কৌশলগত কারণে’ তাবিথ আউয়ালের নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়নি। বিএনপির মহাসচিব জামাতের সংগে তার আলোচনার বিষয় উপস্থাপন করে বলেন, জামাতের সাথে সমঝোতা না করে প্রার্থী দিলে, সেলিম উদ্দিন প্রার্থিতা নাও প্রত্যাহার করতে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য জামাত বাড়াবাড়ি করছে বলে মন্তব্য করেন। এদের একজন মন্তব্য করেন, জামাত খুব বাড়াবাড়ি করছে। আমরাও দেখি একা নির্বাচন করে তারা কতদূর যায়। বেগম জিয়া এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন।
তিনি বলেন ‘জামাতকে লাগবে।’ জামাতের সাথে সমঝোতার জন্য বিএনপি মনোনয়ন নাটক মঞ্চস্থ করেছে। আজ থেকে বিএনপি মনোনয়ন ফরম বিতড়ন শুরু করেছে। কাল বিকেল ৪টার মধ্যে মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুকরা আবেদন জমা দেবেন। ১৫ জানুয়ারি রাতে আবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক হবে। এর মধ্যেই বিএনপি জামাতের সাথে একটা সমঝোতা করতে চায়।
বাংলা ইনসাইডার
জরিপে এগিয়ে পার্থ, পরেই মাহী, তাবিথ ৩য়
ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বিজেপি নেতা আন্দালিব রহমান পার্থ। দ্বিতীয় স্থানে আছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের নেতা মাহী বি. চৌধুরী। জনপ্রিয়তার দৌড়ে তৃতীয় স্থানে আছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক জনপ্রিয়তায় চতুর্থ স্থানে আছেন। আর পঞ্চম স্থানে আছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম। তবে, উত্তরের একটি বিরাট অংশ ভোটার এখনো মেয়র পদে পছন্দের প্রার্থী ঠিক করেননি। সরকারি তিনটি সংস্থার গোপন জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।
মেয়র নির্বাচনে ৫ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নিয়ে ওই তিনটি সংস্থা গত একমাস ধরে উত্তরের ভোটারদের মধ্যে জরিপে চালিয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, ১৩ ভাগ ভোটার বলেছেন আন্দালিব রহমান পার্থ প্রার্থী হলে তাঁকে তারা ভোট দেবেন। ১১ ভাগ ভোটার বলেছেন মাহী বি. চৌধুরী যোগ্য প্রার্থী। তাঁকে মেয়র পদে ভোট ভোট দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন এই ভোটাররা।
১০ ভাগ ভোটারের পছন্দের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। জরিপে ৬ ভাগ ভোটার বলেছেন, তারা চান প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক প্রার্থী হন, তাকেই ভোট দিতে চান তারা। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী মো. আতিকুল হক কে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন ৪ ভাগ উত্তর দাতা। ৫৬ ভাগ উত্তর দাতাই অবশ্য এখনো মেয়র পদে কাউকেই ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি। এরা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রার্থী দেখে প্রার্থী পছন্দ করবেন।
জরিপে দেখা গেছে, ৪৭ ভাগ উত্তর দাতা বলেছেন, তারা প্রতীক দেখে ভোট দেবেন। এদের শতকরা ৪৪ ভাগ বলেছেন তারা নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন। ধানের শীষে ভোট দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৩৭ জন। ১৯ ভাগ উত্তর দাতা বলেছেন, তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। জরিপে শতকরা ৫৩ ভাগ উত্তরদাতা বলেছেন, প্রতীক নয় তারা প্রার্থী দেখে ভোট দেবেন।
এই উত্তরদাতাদের আবার ৭১ ভাগই বলেছেন, তারা প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের মতো প্রার্থী চান।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, জরিপে ৫৯ ভাগ উত্তর দাতা মেয়র নির্বাচনের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাদের ধারণা শেষ পর্যন্ত মেয়র নির্বাচন হবে না।
মেয়র নির্বাচনে জনগণের চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য এই জরিপ করা হয়। সরকারি তিনটি সংস্থা পৃথক ভাবে জরিপ করলেও জরিপের ফলাফলগুলো সমন্বিত আকারে সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে দেওয়া হয়েছে। জরিপের সঙ্গে দেওয়া একটি সুপারিশ মালাও দেয়া হয়েছে।
যাতে মেয়র নির্বাচনে পূর্ব পরিচিতি আছে, জনপ্রিয় এবং কর্মঠ একজনকে প্রার্থী করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সুপারিশ মালায় জাতীয় নির্বাচনের এক বছরেরও কম সময় আগে মেয়র নির্বাচনকে একটি বড় `রাজনৈতিক ঝুঁকি‘ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা সরকারি সংস্থার জরিপ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে জরিপ করেছে। দলের সভাপতির কাছে সেই জরিপের ফলাফলও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।
বাংলা ইনসাইডার