ছাড় দেবে না বিএনপি এগোবে ভিন্ন কৌশলে

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও অংশ নেবে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনের আগে পরীক্ষামূলকভাবেই অন্য সিটির ভোটেও থাকবে দলটি। তবে খুলনা থেকে শিক্ষা নিয়ে গাজীপুরে এবার ভিন্ন কৌশলে এগোবে তারা। ভোটের আগের রাতেই কেন্দ্র পাহারা দেবে বিএনপি। ভোট ডাকাতি হলে প্রতিরোধ-প্রতিহত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। তাছাড়া ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রের বাইরেও ব্যাপক শোডাউন করা হবে।

ভেতরে ভোট ডাকাতি বা কারচুপি হলে তাত্ক্ষণিক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করলে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করে দেশবাসীকে ঘটনা জানানো হবে। ভোটচুরি ঠেকাতে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতিই নেওয়ার কথাই ভাবছেন বিএনপির নীতি নির্ধারকরা।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘খুলনায় যে কৌশলে সরকার ভোট ডাকাতি করেছে, আমরা তা নিয়ে ভাবছি। আমরা পাল্টা রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কাজ করব। যেকোনো মূল্যে ভোট ডাকাতি বন্ধ করা হবে। মোটামুটি সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়ী হবে।

জানা যায়, গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে গত সোমবার বিএনপির সিনিয়র নেতারা গুলশান কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নিবাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, গাজীপুর নির্বাচনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারসহ গাজীপুরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৫৭টি ওয়ার্ডভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ১৮ জুন থেকে কাজ শুরু করবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রয়োজনে বিশেষ টিম কাজ করবে। নির্বাচনে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কাছে ঢাকা থেকে অভিযোগ তুলে ধরা হবে। খুলনার নির্বাচনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে বৈঠকে অভিযোগ আনা হয়।

এ কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যম চাওয়া হবে। ভোটের আগের রাত থেকেই কেন্দ্র পাহারা দেওয়া হবে। প্রতিটি বুথেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এজেন্ট উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।

বৈঠকে মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘সরকার যতই ভোট ডাকাতির চেষ্টা করুক না কেন, আমি জিতবই। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। কীভাবে সফল হতে হয় আমার জানা আছে। পার্টি আমাকে সহযোগিতা করছে। এটা অব্যাহত থাকলে ইনশাআল্লাহ ধানের শীষের বিজয় হবেই হবে।’

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সব নেতাদেরই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এরপরও যদি সরকার গণরায় পাল্টানোর চেষ্টা চালায় তাহলে তা নিয়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে মাঠ গরম করা হবে। গাজীপুর থেকেই আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরির চিন্তাভাবনাও রয়েছে দলটির।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘খুলনা আর গাজীপুর এক নয়। গত নির্বাচনে বিএনপি দেড় লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। এবার সুষ্ঠু ভোট হলে অন্তত ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের প্রার্থী জয়লাভ করবে।’

বিএনপি মনে করে, খুলনায় দলীয়ভাবে কিছু ভুলত্রুটি হয়েছিল। সেগুলো গাজীপুরে শুধরানো হবে। এ নিয়ে সোমবার গুলশান কার্যালয়ে  বৈঠকেও বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘গাজীপুরে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হলে সরকারকে তার খেসারত দিতে হবে।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin