চাষাঢ়ায় শামীম-আইভী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ; সাংবাদিকসহ আহত ২০

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে আজ বিকাল চারটার পর থেকেই দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার আর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষ এখনো চলছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

প্রসঙ্গত,হকার উচ্ছেদ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে ছিলেন শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াৎ আইভী। নারায়ণগঞ্জে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর দুই রাজনীতিক আবার একে অপরকে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন।

এ ঘটনায় পুরো নারায়ণগঞ্জ আতংকের নগরীতে পরিনত হয়েছে।সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

এর আগে ডিসেম্বরের শেষ দিকে শহরের ফুটপাত থেকে হকারদের উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন এবং পুলিশের যৌথ দল। আর এরপর থেকে হকারদের পক্ষে নেমেছেন শামীম ওসমান। তার দাবি, পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ হওয়ায় সমালোচনা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এটা তিনি মেনে নেবেন না।

সোমবার হকারদের নিয়ে সমাবেশ করে শামীম ওসমান ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। বলেন, মঙ্গলবার বিকাল চারটার মধ্যে হকারদের বসার সুযোগ করে দিতে হবে। ‘এটা আমার অনুরোধ না, আমার নির্দেশ’ এমন কথা বলেও আইভীকে সতর্ক করেন শামীম।

আবার শামীমের হুঁশিয়ারিতে পাল্টা সতর্কতা দেন আইভীও। নারায়ণগঞ্জ শহর শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকা না-এটাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

দুই নেতার পাল্টাপাল্টি অবস্থানে শহরবাসীর মধ্যে কৌতুহল আর ক্ষমতাসীনদের দুই পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মেয়র আইভীকে দেয়া আল্টিমেটাম শেষ হলে শামীম ওসমান কী করবেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় নগরবাসীও।

একজন উপমন্ত্রীর মর্যাদায় মেয়র আর অপরজন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য। দুই হাইপ্রোফাইল রাজনীতিকের পরস্পরের প্রতি হুমকি-পাল্টা হুমকিতে বেকায়দায় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কী করা যায়, ভাবছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা পড়েছি ফাঁটা বাঁশের মধ্যে। একদিকে মেয়র অন্যদিকে এমপি। তার আদেশ মানব আর কার আদেশ অমান্য করব? কাকে বাধা দেব আর কাকে দেব না? আশা করছি দুই নেতা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবেন। এতে সবারই মঙ্গল।’

শামীমের ঘোষণা অনুযায়ী তিনি আজ বিকাল চারটার পর হকারদের আবার ফুটপাতে বসাবেন। বিকাল সাড়ে চারটার পর তিনি নিজে চাষাঢ়া শহীদ মিনারে থাকবেন।

এই পরিস্থিতিতে সকাল থেকে চাষাঢ়া শহীদ মিনারে অবস্থান করছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জে অনেকটা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

চাষাঢ়া এলাকায় শহীদ মিনারে অবস্থান করা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল হোসেন বলেন, ‘এখানে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা অবস্থান করছি। নিয়মিত রুটিন হিসেবে আমাদের এখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশপাশে কোথাও সমস্যা হলে আমরা যেন দ্রুতগতিতে সেখানে যেতে পারি সেজন্য আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin