gora_as

ঘোড়ায় চড়ে পিএসসি পরীক্ষার হলে আসা কে এই আসিফ

বাড়িতে পোষা ঘোড়া আছে। তাই শিশুকাল থেকেই বাড়িতে থাকা ঘোড়ার লালন-পালন করে আসিফ (১০)। ঘোড়াও যেন তাকে চিনে রেখেছেন মালিক হিসাবে। তাই তো ঘোড়া পিঠেই চড়ে এসেই চলতি পিএসসি পরীক্ষা দিয়েছে আসিফ।

রোববার পিএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষা দিতে আসিফ ঘোড়ার পিঠে চড়ে কেন্দ্রে আসতো। তার ঘোড়ায় চড়ে আসায় পরীক্ষা কেন্দ্র জুড়ে শিশু পরীক্ষার্থীদের কাছে ছিল অন্যরকম আনন্দের।

আসিফ রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সে চুনিয়াপাড়া গ্রামের আজগর আলীর শিশু এবং চুনিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

রোববার অংক পরীক্ষায় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আসিফের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষে প্রবেশপত্র কলম নিয়ে গাছে বেধে রাখা ঘোড়া পিঠে উঠে বসলো। ছোট মানুষ ঘোড়ার উঠতে একটু অসুবিধা হলেও তার কাছে যেন সহজ ব্যাপার। তার এ ঘোড়ার পিঠে উঠা দেখতে জড়ো হলেন শত শত পিএসসি পরীক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা কেন্দ্রেই কথা হয় আসিফের সাথে। আসিফ জানায়, বাড়িতে থাকা ঘোড়াটি আমার একজন সঙ্গি। পরীক্ষা কেন্দ্রেও তাকে সঙ্গি করে এনেছেন সখের বসে। বাড়ি থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রের দুরত্ব ৮ থেকে ৯ কিলোমিটর হবে। সময়মত ভ্যান অটো পাওয়া যায় না। তাই ঘোড়ায় চড়ে সময় টাকা দুইটোই বাঁচবে।

 আসিফ জানান, তার বাবা একজন কৃষক। কৃষক হলে তার বাবা একজন সৌখিন মনে মানুষ। সখের বসে বাড়িতে ঘোড়া পোষে। বাবা কৃষি কাজে বাড়ির বাইরে ব্যস্ত থাকে। তাই বাড়িতে থাকা ঘোড়ার দেখ-ভাল সেই করে থাকে।

আসিফ আরো জানায়, শুরুতে ঘোড়ার পাশে যেতে ভয় লাগত। এখন ঘোড়ায় যেন সঙ্গি হয়ে উঠেছে তার। শুধু পরীক্ষা কেন্দ্রই নয়, ঘোড়ার পিঠে সে বাজার, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে ঘুরতে যায়।

আসিফ বলেন, এ ঘোড়া আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে গেছে। ঘোড়াটি আমাকে বন্ধুর মত ভাবে।

আসিফের বাবা আজগর আলী জানান, ঘোড়া পোষা তাদের পরিবারের একটি ঐতিহ্য। তার বাপ-দাদারাও ঘোড়া পোষতেন এবং যাতাযাতের সঙ্গি হিসাবে ঘোড়ার পিঠে চড়ে বেড়াতেন। তাই তার আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকলে শুধু মাত্র বংশের ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ঘোড়া পোষেন তিনি।

তিনি আরো জানান, আমি কৃষি কাজে মাঠে-ঘাটে থাকি। তাই ঘোড়ার দেখাশুনা আমার ছোট ছেলে আসিফ করে থাকে এবং সে ঘোড়াই চড়ে বেড়ান।

মু-ুমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব সুবত চঁন্দ বর্মন জানান, প্রথম পরীক্ষার দিন থেকে স্কুলের পাশে গাছের সাথে একটি ঘোড়া বাধা দেখে মনে হয়েছিল কোন ব্যাক্তি ঘোড়া নিয়ে অন্য কোন কাজে এসেছিল। তবে দ্বিতীয় পরীক্ষার দিন বোঝা গেল আসলে ঘোড়াটির মালিক একজন পিএসসি পরীক্ষার্থী। সে সবগুলো পরীক্ষা ঘোড়ার পিঠে চড়ে এসেই দিয়েছে।

Check Also

fk547945-45657541

পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা অটুট রাখতে কাজে লাগান এই ৫টি অব্যর্থ কৌশল

বর্তমানের চূড়ান্ত ব্যস্ত জীবনযাত্রা, অনিয়মিত ডায়েট এবং প্রচণ্ড শারীরিক-মানসিক চাপের কারণে বন্ধ্যাত্ব অত্যন্ত সাধারণ একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin