‘খুলনা সিটি নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ-অস্বচ্ছ, ব্যর্থ ইসি’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সদ্যসমাপ্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ। এই নির্বাচনে কমিশন (ইসি) ব্যর্থ হয়েছে।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে গত ১৫ মে অনুষ্ঠেয় খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন ও সুজনের দৃষ্টিতে নির্বাচন শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, খুলনা নির্বাচনে ইসি ব্যর্থ হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, কুমিল্লার অর্জন খুলনায় ম্লান হয়েছে। ইসি প্রার্থীদের হলফনামা পর্যবেক্ষণ করেনি।

সুজন সম্পাদক বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ক্ষমতাহীন করেছে। পুলিশ বাহিনী ইসির অধীন, এটাইতো তারা জানে না। এমন ধরপাকড় কেউ আগে কখনো দেখেনি।

তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি। কোনো কোনো কেন্দ্রে প্রতীকে সিল দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। উল্টা দিকে সিল-স্বাক্ষরবিহীন ব্যালটকেও বৈধ ভোট হিসেবে গণনা করা হয়েছে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একই সাথে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। নির্বাচনে দৃশ্যত বড় কোনো ধরনের অঘটন ও সহিংসতা ছাড়া অনুষ্ঠিত হলেও স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সুজন সম্পাদক বলেন, কমিশনের প্রস্তুতি ভালো ছিল বলা হলেও এক পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। পরে তাকে সহায়তার জন্য যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজনকে খুলনায় পাঠানো হয়, যা নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, একই সাথে এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক ও আইন সম্মত কিনা তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন রয়েছে। এর মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে।

উৎসঃ   অনলাইন বাংলা

হঠাৎ রাস্তায় বসে রাসিক মেয়র বুলবুলের প্রতিবাদ

ফুটওভার ব্রিজে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের টাঙানো ব্যানার সরিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি ব্যানার টাঙিয়েছে ছাত্রলীগ। এর প্রতিবাদে রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সাথে ছিলেন এক মহিলা কাউন্সিলরসহ কয়েকজন।

মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুরে তিনি নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার এলাকায় আরডিএ মার্কেটের সামনের সড়কে বসে এই কর্মসূচি পালন করেন।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার (২২ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেয়রের ওই ব্যানারটি সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ব্যানার টাঙিয়ে দেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র বুলবুল তার ব্যানারে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। আহ্বান জানিয়েছিলেন নগর পরিচ্ছন্ন রাখার।

আর মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। ব্যানারে আসছে সিটি নির্বাচনে লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাতে ব্যানার সরিয়ে ফেলার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এ সময় মুখোমুখি অবস্থান নেন বিএনপি-ছাত্রদল ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ গেলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারা সবাই চলে যান।

তবে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের ব্যানার সরিয়ে নিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন মেয়র বুলবুল। এই সময়ের মধ্যে ব্যানার অপসারণ করা না হলে তিনি রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। কথামতো, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তিনি রাসিকের একজন নারী কাউন্সিলর ও দলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে ওই ফুটওভার ব্রিজের সামনে গিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন।

এ সময় পুলিশ তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেউ একজন মেয়রের সামনে এক টাকার একটি কয়েন ছুঁড়ে মারেন। কয়েনটি মেয়রের সামনে গিয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা পয়সা ছুঁড়ে ফেলা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তাকে শনাক্ত করা যায়নি। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশের একজন সদস্য মেয়রের সামনে থেকে কয়েনটি সরিয়ে নেন।

এর কয়েক মিনিট পরই মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি রকি কুমার ঘোষের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী একটি মিছিল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তারা মেয়র বুলবুলের কাছ থেকে মাত্র কয়েকহাত দূরে অবস্থান নিয়ে মেয়রকে কটুক্তি করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় উত্তেজনা দেখা দেয়, নগরীর প্রাণকেন্দ্রের এই রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। পরে দেড়টার দিকে মেয়র বুলবুল রাস্তা থেকে উঠে চলে যান।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ওভার ব্রিজে আগে থেকে আওয়ামী লীগেরই ব্যানার টাঙানো ছিল। মেয়র বুলবুল তা অপসারণ করে নিজেরটা টাঙিয়েছিলেন। তাই দলের কর্মীরা তার ব্যানার সরিয়ে আবার আওয়ামী লীগেরটা টাঙিয়েছেন। পাশাপাশি ব্যানার সরিয়ে নেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলেই জানান লিটন।

এর আগে কর্মসূচি চলাকালে অবস্থান কতক্ষণ চলবে জানতে চাইলে মেয়র বুলবুল বলেন, ‘দেখা যাক, এটা প্রতিবাদ। মানুষকে তো রাস্তায় থাকতে হবে। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের দখলদারি চলছে। আমার ব্যানার সরিয়ে ফেলে তারা নিজেদের ব্যানার টাঙিয়ে হীনমন্যতার এবং প্রতিহিংসার পরিচয় দিয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পুরো শহরেই তাদের ব্যানার শোভা পাচ্ছে। সিটি করপোরেশনের অনুমোদন না নিয়েই তারা ব্যানার টাঙিয়েছে। অথচ আমার নগরবাসীর কাছে মাহে রমজান ও ঈদের শুভেচ্ছা জানানো ব্যানারটি হটিয়ে তাদের ব্যানার দিয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin