dudu

‘খালেদা জিয়ার উপর ফুলের আঁচড় পড়লেও বাংলাদেশ গর্জে উঠবে’

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি হচ্ছে একদিক থেকে ফয়সালার দিন। এই দিনে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গায়ে যদি ফুলের আঁচড়ও পড়ে বাংলাদেশের মানুষ গর্জে উঠবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং এরশাদ বেগম জিয়াকে জেলে ভরতে চান, দেশবাসী সেটা জানে। তাদের এই আক্রোশ দেশবাসী মানবে না। আমি ছোট করে বলি রাস্তায় কে নামলো কে নামলো না, এটা নিয়ে কিছু বলার নেই। বেগম খালেদা জিয়ার গায়ে যদি ফুলের আঁচড়ও পড়ে বাংলাদেশ এমনিতেই গর্জে উঠবে। আমরা কি করলাম না করলাম এতে কিছু যাবে আসবে না। বাংলাদেশ কখনও বসে থাকবে না।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত ‘আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও স্মরণসভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘খুব স্পষ্ট করে বলি আমাদের প্রথম পছন্দ আর অনুরোধ আপনার কাছে- আলোচনায় আসুন। প্রথম পছন্দ অনুরোধ ‘আলোচনা’। দ্বিতীয় পছন্দ হচ্ছে রাস্তার আন্দোলন ।সেই আন্দোলনে যদি আমরা একবার শুরু করি আপনাকে পরাজিত করার আগে রাস্তা থেকে ঘরে ফেরার কোন সুযোগ নেই। আমাদের নেত্রী অতীতে এরশাদের পতন না ঘটিয়ে নির্বাচনে যাননি। যদি বিবেচনায় আসেন ভাল। আর যদি না আসেন ৮ তারিখ থেকেই বাংলাদেশের মানুষ বিএনপির নেতৃত্বে রাজনৈতিকভাবে অন্যায় অত্যাচার প্রতিরোধে গর্জে উঠবে। এর কোন বিকল্প নেই।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলি, একদিন পাকিস্তানিরা শেখ মুজিবেরও বিচার করেছিল। তাকে সাঁজা দিয়েছিল এবং কারাগারেও ভরেছিল। তাতে কি পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছিল? শেখ মুজিব কি জাতির কাছে ছোট হয়েছিল? নাকি বীর সন্তান হিসেবে শেখ মুজিব জাতির কাছে আবির্ভূত হয়েছিল? এটি যদি আপনি তার কন্যা হিসেবে একটু ভাবেন, চিন্তা করেন তাহলে বুঝতে পারবেন জেলে ভরলেই সমস্যার মীমাংসা হয় না। সাজা দিলেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন ঠেকানো যায় না।

তাই আমি অনৈতিক সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে বলবো সময় থাকতে হুঁশিয়ার হোন। সময় থাকতে বিবেচনায় আসেন। আমরা আপনাকে পরাজিত করতে চাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা রক্ষা করতে চাই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। কিন্তু আপনি যে জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন সেই জায়গায় সুষ্ঠধারার কোন কিছু থাকবে না। আপনি কি করে প্রত্যাশা করলেন বেগম জিয়াকে চাপ দিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচনে বিএনপিকে অংশগ্রহণে বাধ্য করবেন। বিএনপির জন্মই হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং রক্ষা করার জন্য। বিএনপি যদি ঐই ধরনের নির্বাচনে যায় ঐ দিনই তো আমাদের মৃত্যু হবে। জেনে শুনে আমরা ঐ ধরনের নির্বাচন করবো- এটা যদি আপনারা প্রত্যাশা করেন বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

আলোচনা সভায় প্রধান আালোচকের আলোচনায় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা যিনি নিজেকে রক্ষা করার জন্য অষ্ট্রেলিয়ায় তার মেয়ের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছেন। কত বড় বর্বর একটি দেশের সরকার। যে দেশের প্রধান বিচারপতি বাঁচার জন্যে রক্ষা পাওয়ার জন্য দেশত্যাগ করেছেন। নাকি তাকে বাধ্য করা হয়েছে এটা আমি জানি না। তিনি যাওয়ার সময় স্পষ্ট করে বলে গেছেন এই দেশের নিম্ম-আদালত পুরোপুরি ভাবে সরকারের করায়ত্ত।

সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের অবস্থা খুব ভাল না। এটার জন্য পণ্ডিত হওয়ার কোন কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার শেখ হাসিনা বক্তব্য, বিবৃতি, সিদ্ধান্ত একটু খেয়াল করলেই বুঝা যাবে। গতকাল এবং পরশুদিন তিনি বলেছেন, বুদ্ধিজীবীদের কথা, সুশীল সমাজের কথা, শিক্ষিত মানুষের কথা তার মনে পড়লেই গাধার কথা মনে হয়। এই রকম একটি বর্বর প্রধানমন্ত্রীর হাতে পড়েছে আমাদের বাংলাদেশ। তার এমন বক্তব্য প্রমাণ করে তিনি শিক্ষিত মানুষের পর্যায়ভুক্ত নন। সুশীল সমাজের পর্যায়ভুক্ত ননি। যার জন্য স্বাভাবিক কারণেই প্রতিহিংসার মধ্যে দেশ, জাতি এবং জনগণ পড়ে গেছে।

আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, কোকো রাজনীতিবিদ ছিলেন না, ক্রীড়াঙ্গনে তার বিচরণ ছিল শুধুমাত্র শহীদ জিয়ার সন্তান হওয়ার জন্য। কোকো শেখ হাসিনার আক্রোশের শিকার। তার মৃত্যুর হিসাব আমরা একদিন চাইবো। কোকোর প্রসঙ্গ চাপা পড়ে যাবে এটা ভাবার কোন কারণ নেই।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা নাসির উদ্দীন হাজারির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমত উল্লাহ, মিসেস সাবিরা নাজমুল, জিনাফের সভাপতি মিয়া মো: আনোয়ার প্রমুখ।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin