khaleda_05

খালেদা জিয়ার অগ্নিপরীক্ষা

২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এবছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত জেলে ছিলেন খালেদা জিয়া। জেলে থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক কোন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারেননি তিনি। গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুকম্পায় কারাগার থেকে মুক্ত হন এবং এখন গুলশানে ‘ফিরোজায়’ অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেননি। এমনকি কোনো বিবৃতি বক্তৃতা দিতেও তাকে দেখা যায়নি। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি জেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি বছর তিনি ৭ নভেম্বর জিয়ার কবর জিয়ারত করতেন বেগম জিয়া।

বিএনপির জন্য ৭ নভেম্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, যে ঐ দিন দলটির ভ্রুল রচিত হয়েছিল। ৭ নভেম্বরের ঘটনা এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ধারাবাহিকতায় বিএনপির নামে রাজনৈতিক দলটির জন্ম হয়েছিল।

কাজেই বিএনপির কাছে ৭ নভেম্বর কেবল একটি দিন নয়, বিএনপি যে আদর্শকে লালন করে, সে আদর্শের অন্যতম প্রধান একটি দিবস। আর এই দিবসটি বিএনপি সবচেয়ে বেশি ঘটা করে পালন করত। কিন্তু আগামীকাল (শনিবার) ৭ নভেম্বর বেগম জিয়া তার স্বামীর কবরে যাবেন কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিএনপি নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি নেতৃবৃন্দকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি অসুস্থ। এ অবস্থায় তিনি জিয়ার কবর জিয়ারত করতে যাবেন না। বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার জানিয়েছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।

তার স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করার করতে সমস্যা হয়। তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন না। তার চিকিৎসাই এখন প্রধান বিষয়। আর এ কারণেই তিনি কোনো দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে না। সেই ধারাবাহিকতায় ৭ নভেম্বরের কর্মসূচিতে বেগম জিয়া থাকছেন না, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। আর এটাই বেগম খালেদা জিয়ার অগ্নিপরীক্ষা।

বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, বেগম জিয়া যদি ৭ নভেম্বরের কর্মসূচীতেও কোনরকম বিবৃতি না দেন, কিংবা কোনো রকম কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে যে বেগম খালেদা জিয়া আর রাজনীতিতে নেই। রাজনীতি থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন। কারণ ২৫ মার্চের পর থেকে এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এমনকি তার স্বামীর মৃত্যু বার্ষিকীতেও তাকে কোন বাণী বা বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি। এখন আগামীকাল তিনি কি করেন সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

অবশ্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া একরকম বন্দি আছেন। তাকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হচ্ছে না।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এ ধরনের বক্তব্যকে খন্ডণ করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের বক্তব্যের কোন বাস্তবতা ভিত্তি নেই। আইন মন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারও।

২৫ শে মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত বেগম জিয়া কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অংশগ্রহণ করেননি। এমনকি তার নামে কোন বিবৃতি দেয়া হয়নি। আর এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে যে, তিনি কি তাহলে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন?

তিনি কে রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন? আগামীকাল এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। বিএনপি নেতারা বলছেন যে, আগামীকাল তিনি অসুস্থতার কারণে হয়তো জিয়ার কবরে যেতে পারবেন না।

কিংবা কোন সভা সমাবেশ বা আলোচনায় বক্তব্য রাখতে পারবেন না। কিন্তু খালেদা জিয়ার নামে ৭  নভেম্বর যদি বাণী না দেয়া হয়, তাহলে মনে করা হবে যে রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার প্রস্থান চূড়ান্ত হয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin