আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি চেয়ারপার্সন ‘খালেদা জিয়া’ ও তার জনপ্রিয়তার আতঙ্কে সরকার নার্ভাস হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের হল রুমে ঢাকা জেলা মহিলা দলের কর্মীসভায় তিনি একথা বলেন।
সরকারের মধ্যে খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু আরও বলেন, ‘সরকারকে একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্বাচনী ফসল ঘরে তুলতে পারবেন না। এটা করতে চাইলে আপনাদেরকে উচ্চমূল্য দিয়ে বিদায় নিতে হবে। তবে আমরা চাই না আপনারা উচ্চমূল্য দিয়ে বিদায় নেন’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই আওয়ামী লীগ দেশে স্বাভাবিক রাজনীতি করুক। তবে তার আগে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের সুযোগ দিতে হবে। ’
এসময় রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিকে একটি অসমচুক্তি হিসেবেও আখ্যায়িত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
বিডি-প্রতিদিন
পুলিশের বাধায় পণ্ড বিএনপির বিক্ষোভ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ মিছিল পুলিশ পণ্ড করে দিয়েছে।রোববার সকাল থেকেই পুলিশ ভোলা, মুন্সীগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলায় দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। এর ফলে নেতাকর্মীরা জেলা শহরে কোনো বিক্ষোভ করতে পারেননি।
তবে কোথাও কোথাও শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার খবর পাওয়া গেছে।লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বারবার তাঁর স্থায়ী জামিনের আবেদন জানালেও আদালত তা নাকচ করে দেন।
গত বৃহস্পতিবারও এক মামলায় রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হরতাল চলাকালে নিরাপত্তার কারণে তিনি সকালে আদালতে যেতে পারেননি।
পরে তাঁর আইনজীবীরা দুপুরের পর আদালতে হাজির হওয়ার আবেদন জানান। কিন্তু বিচারক সময়মতো আদালতে হাজির না হওয়ায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকাবস্থায়ও একই আদালত দুই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
দেশে ফেরার পরপরই তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন এবং নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যেই আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ৬ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন।
বেলা ১১টায় বিএনপি ভোলা শহরের মহাজনপট্টির দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে একটি গাড়ি রেখে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে রাখে। ফলে নেতাকর্মীরা আর বের হতে পারেননি। ব্যানার বের করলে পুলিশ তা নিয়ে যায়। একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় তাঁরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।এদিকে সকাল থেকেই দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসির নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। কার্যালয়ের আশপাশ ছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
পরে বিএনপির কার্যালয়ে জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেনের উপস্থাপনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ ট্রুম্যান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আসিফ আলতাফ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা পুলিশি বাধার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এভাবে পুলিশ দিয়ে বেশি দিন আন্দোলন-সংগ্রাম দাবিয়ে রাখা যাবে না। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা, ওয়ারেন্ট বাতিলের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
purboposhchim