খালেদার মুক্তির শর্তে নির্বাচনে যাবে বিএনপি?

বিএনপির নির্বাচনে যাবার শর্তে মুক্তি পেতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া। একটি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং আরও প্রায় দেড় ডজন মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রায় সাত মাস কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন। এতিমখানার টাকা আত্মসাতের মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। আরও ১৪ টি মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

এখনো দুটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান কৌসুলি খন্দকার মাহাবুব হোসেন স্বীকার করেছেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তি এখন আর আইনি বিষয় নয়, এটা রাজনৈতিক বিষয়। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া তাঁর মুক্তি অসম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘এখনো দুটি মামলায় তাঁর জামিন হয়নি, এ দুটি মামলায় জামিন নিতে গিয়ে দেখা যাবে, আরও নতুন মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।‘ যদিও তাঁর এই মতামতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন। তাঁর মতে, শিগগিরই বাকি মামলাগুলোতেও তাঁর জামিনের ব্যবস্থা করা হবে।

গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেই বলেছেন, বেগম জিয়ার গ্রেপ্তার কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এর একদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আদালত যদি বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয় সেক্ষেত্রে সরকারের কিছুই বলার থাকবে না।’

সরকার মুখেই যাই বলুক, বেগম জিয়ার অন্তত দুজন আত্মীয় নিয়মিত ভাবে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বেগম জিয়ার ছোটভাই শামীম ইস্কান্দার, যেকোনো শর্তে বেগম জিয়ার মুক্তির আবেদন করেছেন।

একাধিক সূত্র বলছে, বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য শর্তহীন ভাবে বিএনপির আগামী নির্বাচনে যাবার ঘোষণা চায় সরকার। বিএনপি’র নির্বাচনে যাবার শর্তে বেগম জিয়ার জামিনের ব্যাপারে সরকার নমনীয় অবস্থান নিতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ রকম আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই, ঈদের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য পাঠানো হয়েছিল।

কিন্তু বিএনপি মহাসচিবের সাথে সাক্ষাতে বেগম জিয়া নি:শর্তভাবে নির্বাচনে যাবার প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তিনি (বেগম জিয়া) কেবল তাঁর মুক্তির পরই নির্বাচনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পাল্টা শর্ত দিয়েছেন। বিএনপির একজন নেতা, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তিই আমাদের নির্বাচনে যাবার প্রধান শর্ত।

বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া আমরা নির্বাচনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানাবো না।’ সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র গুলো বলছে, ‘সরকার বেগম জিয়া মুক্তি পেলে নির্বাচনে যাবে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছে। কারণ, বিএনপির কথা এবং কাজের মধ্যে মিল নেই।

তবে, বিএনপিতে নির্বাচনে যাবার পক্ষের নেতারা বলছেন, ‘আমাদের তো নির্বাচনে যাবার একটা উপলক্ষ দিতে হবে। বেগম জিয়া জামিনে মুক্তি পেলে অন্তত একটা যুক্তি বা অর্জন আমরা নির্বাচনে যাবার পক্ষে দেখাতে পারবো। একজন নেতা বলছেন, ‘আমাদের তো কিছু একটা বোঝাতে হবে কর্মীদের।’

শেষ পর্যন্ত কি তাহলে বেগম জিয়ার মুক্তির অর্জন নিয়ে বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে? রাজনৈতিক অঙ্গনে এটিই এখন বড় প্রশ্ন।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin