বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় পরবর্তী শুনানি ২৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেছে আদালত। এ মামলায় যুক্তিতর্কের শুনানিতে শুরু থেকেই উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো শুনানি শেষে এই দিন নির্ধারণ করেন রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে বিচারক।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ।
ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ ছাড়া আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারিত রয়েছে।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে উভয়পক্ষ পরস্পরের মধ্যে এই বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটের দিকে বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আক্তারুজামান এজলাস ছেড়ে চলে যান।
এরপর অবশ্য ১৫ মিনিট পরে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ফের এজলাসে ফিরেন বিচারক। আদালত কক্ষে ফিরে এসে বিচারক আখতারুজ্জান বলেন, আইনজীবীদের মধ্যে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু এসময় পাশ থেকে জুনিয়ররা হট্টগোল করবেন কেন?
তিনি বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামনে এভাবে হট্টগোল করা ঠিক? এটা উনার জন্য মানসন্মানের ব্যাপার। আমিনুল ইসলাম ভালো আইনজীবী। বলুক না। অপ্রাসঙ্গিক হলে আমি নিজেই থামিয়ে দেবো।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম দুঃখ প্রকাশ করে ফের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। তখন আদালত জুনিয়র আইনজীবীদের কথা না বলার জন্য পরামর্শ দেন। সিনিয়র আইনজীবীকে কথা বলার জন্য আদেশ দেন। এরপর আবার শুনানি শুরু হয়।
এর আগে শুনানির শুরুতে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম আদালতে বলেন, ‘দুদকের পিপি বললেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করতে পারেন না। অথচ গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটে গিয়ে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বক্তব্য দিচ্ছেন। তা তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে করছেন, নাকি ব্যক্তিগত কাজ?’
এসময় মোশাররফ হোসেন কাজল প্রতিবাদ শুরু করেন। এর মধ্যেই উভয়পক্ষের আইনজীবীরা এগিয়ে এসে পরস্পরের মধ্যে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এটা একপর্যায়ে হট্টগোলে পরিণত হলে বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান।