খালেদার অর্থপাচারের খবর মিথ্যা-বানোয়াট: সৌদি বিএনপি

খালেদা জিয়া ও তার দুইপুত্রের কাতার-সৌদি আরবে বিপুল সম্পদের খবরকে মিথ্যা, বানোয়াট বলে দাবি করেছে সৌদি আরব বিএনপি।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সৌদি আরব শাখা সভাপতি আহমেদ আলী মুকিব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কল্পিত পাচারকৃত সম্পদের বর্ণনা এবং কল্পিত সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত কল্পিত সম্পদ সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী জেদ্দায় এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, সৌদিআরব বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুর রহমান, সৌদিআরব বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর মনিরুজ্জামান তপন, সহসভাপতি কেফায়ত উল্লাহ কিসমত, আব্দুল মান্নান, এম এ আজাদ চয়ন, মোহাম্মদ আলী, ইনভেস্টার ফারুক মাহমুদ, ইন্জিনিয়ার নুরুল আমিন, সেলিম রেজা খন্দকার, সিআইপি হেলাল, সাইদুল ইসলাম, শাহ আলম, নাজমুল কামাল, সোয়েব আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, নুরুল আফছার মুস্তাক, গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।

তিনি বলেন, কাল্পনিক দুর্নীতির এসব কাহিনীর মূল উদ্দেশ্য দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং রাজনৈতিকভাবে তাকে জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা মাত্র। এসব তথ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভিত্তিহীন।

মুকিব বলেন বলেন, আরবভিত্তিক চ্যানেলগুলির বরাত দিয়ে গ্লোবাল ইন্টিলিজেন্স নেটওয়ার্ক এবং কানাডার একটি টিভি চ্যানেল এই সংবাদ প্রচার করা হয়েছে বলা হলেও বাস্তবে কানাডায় এই নামে কোন টিভি চ্যানেল নেই। অনুরূপভাবে গ্লোবাল ইন্টিলিজেন্স নেটওয়ার্ক নামে কোন গণমাধ্যম খুঁজে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে সকল ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশ সমূহের সাথে বিশেষ করে সৌদি আরবের সাথে জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যা আজও অটুট রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রতি বছর রাজ পরিবারের সম্মানিত মেহমান হয়ে ওমরা বা হজ্জ করতে আসেন। আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে ও জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়েই সরকার এই সব অসত্য তথ্য পরিবেশন করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

দেশে ভয়াবহ দুঃসময় চলছে: খালেদা জিয়া
ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পূর্বাপর বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমান অবৈধ ক্ষমতাসীন জোট সীমাহীন রক্তপাত ও বেপরোয়া নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে নিয়েছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকারের পরিপূরক। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার শূণ্যের নিচে অবস্থান করছে।

রবিবার আন্তজার্তিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে বেগম জিয়া এসব বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক মানবিক অধিকার হারা নির্যাতিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে বলেন, যারা বাক, ব্যাক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা, মূদ্রণসহ নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হতে গিয়ে ক্ষমতাসীন স্বেচ্ছাচারী গোষ্ঠির নৃশংস নিপীড়নে আত্মদান করেছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।

খালেদা জিয়া বলেন, আজো বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ একদলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন, গোষ্ঠী, বর্ণ ও জাতিগত সংঘাতে অবলীলায় খুন ও গুপ্ত হত্যার শিকার হচ্ছে এবং অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। জাতিসংঘের সার্বজনীন ঘোষণায় বলা হয়েছে বিশ্বের সব জাতির সকল মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে।

কিন্তু দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকেরা জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার নির্দেশনাগুলোকে তাচ্ছিল্য করে নিজ দেশের জনগণের উপর চালিয়ে যাচ্ছে বর্বোরোচিত আক্রমণ। শুধু ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য জনমতকে অগ্রাহ্য করতে হয়, আর সেজন্য এই সকল গণবিরোধী শাসক গোষ্ঠী জনগণের মানবাধিকারের তোয়াক্কা করেনা।

সুতরাং দুঃশাসনের অচলায়তন তৈরী করতে গিয়ে তারা প্রতিবাদি জনগণের ওপর নামিয়ে আনে পৈশাচিক উৎপীড়ন। যারা সত্য উচ্চারণ করতে চায় তারা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজিবিসহ নাগরিক সমাজের যেই হোকনা কেনো, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং কারাবাস, শারিরিকভাবে নির্যাতনসহ জখম, হত্যা ও গুমেরও শিকার হতে হয়।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ দুঃসময় চলছে। এদেশে শুধু বিরোধীদলের নেতাকর্মীরাই শুধু নয়, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, নারী, শিশুসহ কারোই কোনো নিরাপত্তা নেই। এদের অধিকাংশই গুম, গুপ্ত হত্যা এবং বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও দল নিরেপক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক, টকশো আলোচকদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং কাউকে কাউকে কারান্তরীণও করে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘মানবাধিকার দিবস’ এর এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- আমাদের অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা; সর্বদা। বর্তমানে বাংলাদেশে জনগণের না আছে নাগরিক স্বাধীনতা, না আছে মৌলিক মানবিক অধিকার। সুতরাং এই নৈরাজ্যকর দুঃশাসনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের এই মুহুর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কন্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গিকার।

rtnn

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin