খালেদাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি বিএনপির

কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎকার দাবি জানিয়েছেন দলটির নেতারা। রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এই দাবি জানান।

বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি যে, ওনার (খালেদা জিয়া) সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। এই চিকিৎসা যেহেতু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা নির্ভর, অতএব উপযুক্ত স্থানে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করা হোক। আমরা বলেছি যে, ইউনাইটেড হাসপাতালে আগেও ওনার পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে যারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন সেই ডাক্তারদের প্রতি তার আস্থা আছে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘চাইলেই তারা সেখানে চিকিৎসা করাতে পারেন। এতে অন্য কারো অনুমতির দরকার হয় না। এজন্য কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই যথেষ্ট।’

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি ১০ মে

অসুস্থতার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালতে নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক পিছিয়ে আগামী ১০ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।

রবিবার মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে উপস্থিত করা সম্ভব না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে বলেন, তাকে (খালেদা জিয়া) আদালতে উপস্থিত করা না গেলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মামলার পরিচালনা করা যেতে পারে। ভারতে এমন নজির আছে। তবে এমন আবেদনের বিরোধিতা করেন খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। তিনি বলেন, খালেদার উপস্থিতিতেই যুক্তিতর্ক শুনানি করবেন তারা।

ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে যুক্তিতর্ক শুনানি পিছিয়ে ১০ মে নতুন দিন ধার্য করেন।

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুদক।

আরও পড়ুন…….
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আজ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ৫ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।

আদেশে ২২ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারী এ মামলায় দুদকের পক্ষ থেকে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন করা হয়। দুদকের করা ওই আবেদনের ওপর ২৬ ফেব্রয়ারি শুনানি হয়। শুনানি শেষে ১৩ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাজিরের নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ২৮ মার্চ ও ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে হাজিরের দিন ধার্য থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাকে হাজির করা হয়নি বলে আদালতকে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।

এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ৭ বছর কারাদন্ড দাবি করে দুদক প্রসিকিউশন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়।

খালেদা জিয়া ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন- তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন সহকারী একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। মামলায় হারিছ চৌধুরী পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আর অপর দুই আসামি জামিনে আছেন।

প্রসঙ্গত, ৮ ফেব্রুয়ারী ‘ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদন্ড ও প্রত্যেকের ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জারিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin