ক্রসফায়ারে শুধু জীবনই যাচ্ছে না, সত্য নিহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত যতগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে-ক্রসফায়ারের কথা বলা হচ্ছে। এই ক্রসফায়ারে শুধু জীবন যাচ্ছে না। ক্রসফায়ারে সত্য নিহত হয়ে যাচ্ছে। সত্যকে মেরে ফেলা হচ্ছে।
সোমবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের উদ্যোগে খুন-গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং মেজর সিনহার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন আলাল।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ক্রসফায়ারের এই কালচার বন্ধ করতে হবে। তদন্ত হোক, নিরপেক্ষতার মধ্যদিয়ে আমরা চাই। কাউকে বাঁচানোর জন্য নয়, কাউকে ফাঁসানোর জন্য নয়, এই নিরপেক্ষতার তদন্তের মধ্যদিয়ে একটি উদাহরণ সৃষ্টি হোক বাংলাদেশে যে ন্যায়বিচার হয়েছে। তাতে হয়তো তাদের আত্মা শান্তি পাবে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, কূটনীতিক গুম হয়ে যায়। ব্যাংকার গুম হয়ে যায়। সাংবাদিক ঘুম হয়ে যায়। সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা গুম হয়ে যায়। বিমান বাহিনীর পাইলট গুম হয়ে যায়। তারপরে তারা দাপটের সঙ্গে চলাফেরা করে। আর যখনই চোর, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা ওঠে, তখন নতুন নতুন কাহিনী বের হলে আইসিটি অ্যাক্টে মামলায় সাংবাদিকদেরকে ধরে ধরে জেলে ভরে। অর্থাৎ ভিন্নমতকে দমন করার জন্য যা কিছু করা দরকার সেটা করে।
স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির কথা ভিপি নুর বলেছেন। এই স্বাস্থ্যখাতে একটা দুর্নীতির উদাহরণ মোবাইল শপ (অটোমোবাইল) যারা গাড়ি মেরামত করে, সেই শপকে ৩০ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনার জন্য। নয় কোটি টাকার বিলও দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ছয় মাস হয়ে গেলেও সেগুলো সরবরাহ করতে পারেনি। এখন তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। খুলনায় জাহাজ মেরামত কোম্পানিকে দুই কোটি টাকা বাজেট দিয়েছে এই স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনার জন্য। কিন্তু এগুলো তো প্রকাশ্যে আসছে না? কত বিচিত্র রকমের দুর্নীতির মধ্যদিয়ে এ সরকার চলছে!’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনে করে তারা সবচেয়ে শক্তিশালী লোহা, লোহাকে কেউ ধ্বংস করতে পারে না। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, লোহাকে ধ্বংস করতে বাইরের কোনো শক্তি লাগে না। লোহা নিজে নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়। লোহার মধ্যে যখন জং ধরে তখন। আওয়ামী লীগের মধ্যে জং ধরেছে। এই জংয়ের কারণে যেদিন ধীরে ধীরে ক্ষয় হবে সেদিন তাসের ঘরের মতো ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি তারা সুপথে না আসে।’